লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর গুলিতে হাসিবুল ইসলাম (২২) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে ৮৯৪ নম্বর মেইন পিলারের কাছাকাছি এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিহত হাসিবুল সিংগীমারী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে এবং ঘটনার সময় সীমান্তঘেঁষা নিজস্ব জমিতে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন, ঘাস কাটার সময় বিএসএফের একটি টহলদল সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এবং কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই খুব কাছ থেকে গুলি ছোড়ে হাসিবুলের ওপর। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করা হয় এবং আহত অবস্থায় টেনেহিঁচড়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভারতের কুচবিহারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকাজুড়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। এক বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিজিবি (বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড) বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানায়। বিকেলেই অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বিএসএফ উপস্থিত হয় এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত চাওয়া হয়।
এদিকে ঘটনার পর ভারতীয় এক নাগরিককে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক করা হয় এবং তাকে বিজিবির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুন-নবী সাংবাদিকদের বলেন, “গুলিবিদ্ধ বাংলাদেশিকে ভারতের কুচবিহারের হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন বলে শুনেছি।”
তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও তিস্তা ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মুসাঈদ মাসুমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও তিনি রিসিভ করেননি।
সীমান্তে এমন একপাক্ষিক আগ্রাসন ও হত্যা ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্টরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন।