আঞ্চলিক উত্তেজনার কারণে আপাতত স্থগিত করা হয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি (Bilawal Bhutto Zardari)-এর বাংলাদেশ সফর। আগামী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল তার ঢাকা আসার কথা থাকলেও, হঠাৎ করেই সফর স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন (Pakistan High Commission)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক উত্তেজনার কারণে সফর আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে অনুকূল সময়ে দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে নতুন সফরসূচি নির্ধারণ করা হবে।”
এই সফরটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, কারণ দেড় দশকেরও বেশি সময় পর সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশ সফর করেন। সেই সফরের ধারাবাহিকতায় দুই দেশের পররাষ্ট্র দফতর নতুন দিকনির্দেশনা ঠিক করছিল। এমন প্রেক্ষাপটে সফর বাতিল নতুন করে কূটনৈতিক জটিলতার ইঙ্গিত দিলো।
এদিকে, সফর স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত সোমবার রাতে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের পহেলগাঁও এলাকায় এক সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত এই ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান সরকার এর সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনার জেরে ভারত সরকার পাকিস্তানের নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেয় এবং দুই দেশের মধ্যে সিন্ধু নদীর পানি চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও সিমলা চুক্তি (Simla Agreement) বাতিলসহ মোট আটটি কৌশলগত প্রতিক্রিয়া ঘোষণা করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ভারতের বিমান চলাচলের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া।
উত্তেজনা এতটাই তীব্র যে, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামগ্রিকভাবে, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের এই অস্থিরতা ছায়া ফেলেছে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতির ওপর, যার একটি বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল বাংলাদেশের প্রস্তাবিত সফর বাতিলের মধ্যে।