আল জাজিজার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান (Zulkarnain Saer Khan), অনলাইন এক্টিভিস্ট এবং সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন (Elias Hossain) এবং বনি আমিন (Boni Amin) এর কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্য হতাশা জানালেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (NCP) এর সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ (Abdul Hannan Masud)। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক বিশদ স্ট্যাটাসে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।
স্ট্যাটাসে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, অনলাইনে যাচাই-বাছাই ছাড়া পোস্ট করে নিজেদের দায়িত্বশীলতা হারাচ্ছেন অনেক এক্টিভিস্ট। তিনি লেখেন, “একটা ইনফরমেশন পেলেন, সত্য ধরে নিয়ে পোস্ট করলেন, কিছুক্ষণ পর মিথ্যা প্রমাণিত হলে ডিলিটও করলেন। কিন্তু এতক্ষণে লাখো মানুষের সামনে আমাকে বিতর্কিত করে তুললেন।”
৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে কিছু এক্টিভিস্টের আচরণে তিনি ক্রমাগত হতাশ হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন মাসউদ। ফেসবুক পোস্টে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, কয়েকদিন আগে কালের কণ্ঠের এক বিতর্কিত থাম্বনিল দেখে অনেকেই পুরো সাক্ষাৎকার না শুনেই তার বিরুদ্ধে পোস্ট দেন, যেখানে বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।
“কারও দেওয়া গাড়ি সারাজীবনের জন্য নয়, হাতিয়ার একজন ব্যবসায়ী অস্থায়ী ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলেন,” জানান মাসউদ। এরপর প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা তো বড় এক্টিভিস্ট, সাক্ষাৎকারটা একবার মন দিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না?”
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে ইলিয়াস হোসাইন তাকে নিয়ে পোস্ট দেন, যেখানে ছিলো মারাত্মক মিথ্যাচার। যদিও তিনি সেই সময়ই বিষয়টি স্পষ্ট করেন, কিন্তু আজও সেই ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাসউদ।
বনি আমিনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বনি আমিন ভুল বুঝতে পেরে পোস্ট ডিলিট করলেও ক্ষতি ইতোমধ্যেই হয়ে গেছে। আর জুলকারনাইন সায়ের খানের ক্ষেত্রেও একই রকম ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন তিনি। ফোনে কথা বলেও সত্য যাচাইয়ের অনুরোধ করেছিলেন বলে জানান মাসউদ, কিন্তু আজও কোনো ফলোআপ পাননি।
সবশেষে, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে মাসউদ এক আহ্বান জানান, “আপনারা যারা দেশের বাইরে এবং দেশের মধ্যে এক্টিভিস্ট হিসেবে কাজ করেন, তাদের কাছে অনুরোধ—পোস্ট দেয়ার আগে অন্তত আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিন। তাহলেই সত্যটা স্পষ্ট হবে। অন্যথায়, নতুনদের জন্য রাজনীতি কঠিন করে তুলছেন আপনারাই।”
তিনি আরও বলেন, অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, ৫ আগস্টের আগে কেন তাকে গাড়ি ইত্যাদি সহযোগিতা করা হয়নি। মাসউদের উত্তর, “পাঁচ আগস্টের আগে তো আপনাদের কারো মাথাব্যথাই ছিল না আমাকে নিয়ে। এখন পান থেকে চুন খসলেই কথা ওঠে।”
পাঁচ আগস্টের ঘটনার পর মানুষের মনোভাবের বড় পরিবর্তন হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। “একদিকে যেমন শত্রু বেড়েছে, অন্যদিকে হাজারো মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি,”—এই বলে শেষ করেন তার স্ট্যাটাস।