ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বৈধ মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)-কে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো নগরভবনের সামনে চলছে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি। ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে ইশরাকপন্থিরা নগর ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। এর মধ্যে নিজস্ব ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন ও ক্ষোভপূর্ণ পোস্টে ইশরাক অন্তর্বর্তী সরকারের কতিপয় কর্মকর্তাকে দায়ী করেছেন শপথ আটকে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে।
আজ সোমবার (১৯ মে) বেলা পৌনে তিনটার দিকে দেওয়া স্ট্যাটাসে ইশরাক লেখেন, “সর্বশক্তি দিয়ে এরা ঢাকায় বিএনপির মেয়র আটকানোর চেষ্টার মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে কী ভূমিকা পালন করবে, তা ক্লিনকাট (পরিষ্কার) বুঝিয়ে দিল।”
“নিরপেক্ষতা বিসর্জন দেওয়া কর্মকর্তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে”
ইশরাক সরাসরি অভিযোগ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ একচেটিয়া ক্ষমতার দখলে থাকতেই এ ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, “মেয়র ফেওর কিছু না। উদ্দেশ্য একটাই—ক্ষমতার লোভ এবং সেটিকে চিরস্থায়ী করার কুৎসিত মানসিকতা।”
তার ভাষায়, “অনেক সমালোচনা সহ্য করেছি, পিতা–মাতাকে নিয়েও কুরুচিপূর্ণ গালি শুনেছি, তবুও চুপ থেকেছি। কারণ, এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে, জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার স্বার্থে।”
তিনি দাবি করেন, “যারা নিরপেক্ষতার মুখোশ পরে আসলে একটি দলের হয়ে কাজ করছে, তাদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।”
সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ
নাম উল্লেখ করে ইশরাক অভিযোগ করেন, “আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan) শপথ গ্রহণে বাধা দিচ্ছেন।” আন্দোলনকারীদের দাবি, আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও শুধু এই উপদেষ্টার প্রভাবেই ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না।
ইশরাক লিখেছেন, “এরা হাসিনার মতোই বিচারকদের হুমকি দিয়েছে, নির্বাচন কমিশনকে চ্যালেঞ্জ করছে, উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করেছে এবং আমলাতন্ত্রের ভিতরে হাসিনার দোসরদের নিয়ে কুচক্রী পরিকল্পনা করছে।”
“দাবি আদায় না হলে মাটির নিচে”—চূড়ান্ত লড়াইয়ের বার্তা
ইশরাক তার পোস্টে বলেন, “একদিন এদের সবাইকে চিনিয়ে দেবো। হাসিনারেও বলছিলাম, ‘কবরটা ঠিক করাই আছে, আল্লাহর হুকুম থাকলে সেখানেই হবে, ইনশা আল্লাহ।’”
তিনি জানান, এই আন্দোলন শেষ হয়নি। “হয় দাবি আদায় করব, না হয় আল্লাহর নির্ধারিত জায়গায় মাটির নিচে শায়িত হবো। গণতন্ত্রের সঙ্গে, জনগণের ভোটের অধিকারের সঙ্গে একচুল ছাড় দেওয়া হবে না।”
এদিকে আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে নগরভবনে তালাবদ্ধ ফটকের বাইরে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। এখন পর্যন্ত ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠানের কোনো ইঙ্গিত বা সরকারি ঘোষণা আসেনি।