ইশরাক হোসেন (Ishraque Hossain)–কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানো হলে আদালত অবমাননার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন (Barrister Mahbub Uddin Khokon)।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) হাইকোর্ট একটি রিট আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর এ মন্তব্য করেন তিনি। খোকনের ভাষায়, “এই আদেশের পর শপথ গ্রহণে আর কোনো বাধা নেই। যদি ২৬ মে’র মধ্যে ইশরাককে শপথ পড়ানো না হয়, তাহলে সেটা আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে।”
এর আগে, ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ে মেয়র হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পরও ইশরাকের শপথগ্রহণে আইনগত জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ প্রেক্ষিতে, শপথগ্রহণ ঠেকাতে মো. মামুনুর রশিদ (Md. Mamunur Rashid) নামের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। তাঁর পক্ষে আইনজীবী কাজী আকবর আলী রিটে দাবি করেন, শপথ না পড়ানো এবং ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিতে হবে আদালতকে।
তবে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ সেই রিট খারিজ করে দেন। আদেশে বলা হয়, “এই রিটটি করার এখতিয়ার ছিল না। নির্বাচনী ফোরামের মামলা এখানে আনা অনুচিত হয়েছে।”
আদালতের এই রায়ে আপাতদৃষ্টিতে ইশরাকের শপথগ্রহণে আইনি প্রতিবন্ধকতা সরে গেলেও, রিটকারী পক্ষ জানিয়েছে তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের মতে, আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় শপথগ্রহণ বৈধ হবে না।
রিট খারিজের দিন ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। প্রবেশদ্বারগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়, বার কাউন্সিল গেট, মাজার গেটেও মোতায়েন ছিল পুলিশ ও সেনাবাহিনী।
প্রসঙ্গত, ১৪ মে দায়ের করা রিট আবেদনে শুধু ইশরাকের শপথ ঠেকানো নয়, বরং তাঁকে মেয়র ঘোষণা করায় নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। এ রিটেই হাইকোর্ট প্রথমে আদেশের জন্য ২১ মে দিন নির্ধারণ করলেও পরে তা পিছিয়ে ২২ মে ধার্য করে।
সর্বশেষ আদালতের রায়ে এখন আইনি কাঠামোয় ইশরাকের শপথ গ্রহণের পথ সুগম হলেও রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।