‘ফ্যাসিবাদ উৎখাত যাত্রা’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সচিবালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছে প্রতিবাদী সংগঠন জুলাই মঞ্চ (July Mancha)। সোমবার, ২৬ মে থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে বাসা বাঁধা দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিবাদী আমলাদের উৎখাত। দাবি জানানো হয়েছে—জাতির স্বার্থে এইসব ব্যক্তিদের সরানো এখন সময়ের দাবি।
জুলাই মঞ্চের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, সচিবালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)-এর অভ্যন্তরে যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন ও প্রশাসনকে ফ্যাসিবাদের পথে ঠেলে দিচ্ছেন, তারা দেশের উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তারা চাইছেন, রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির মূলোচ্ছেদ ও জনগণের জন্য স্বচ্ছ প্রশাসন নিশ্চিত করতে।
অন্যদিকে, একই সময়ে ভিন্ন একটি আন্দোলনের আবহে সচিবালয় এলাকা পরিণত হয়েছে উচ্চ নিরাপত্তা বলয়ে। সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুমোদনের প্রতিবাদে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলনে রয়েছেন। তাদের অভিযোগ—এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে চাকরির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে।
এই দুই আন্দোলনের কারণে সচিবালয় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন ব্যবস্থা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে সোয়াট (SWAT) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB)-এর সদস্যদের। সোমবার সকাল থেকে সচিবালয়ের প্রবেশপথে দেখা গেছে অতিরিক্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি।
সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার নিয়েও কঠোরতা দেখা গেছে। শুধুমাত্র দাপ্তরিক পরিচয়পত্রধারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই ভিতরে ঢুকতে পারছেন। সকালবেলা সংবাদকর্মীরাও সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে সচিবালয় চত্বর এখন কার্যত একটি রুদ্ধ প্রশাসনিক এলাকা।
প্রতিবাদকারীদের ভাষায়, এই কর্মসূচি শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নয়, এটি সাধারণ মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধার এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠারও আন্দোলন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।