ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহিংসতা ও নারীর প্রতি ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ তুলে কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে সদ্য গঠিত সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (Democratic Student Parliament)। শুক্রবার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি দাবি করেছে, পতিত স্বৈরাচারের সহযোগী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যেভাবে বিরোধী মতাদর্শের কর্মসূচিতে সংঘর্ষে জড়াত এবং সহিংসতা চালাত, ছাত্রশিবিরও বর্তমানে একই কায়দায় নামে-বেনামে সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি দিয়ে ফ্যাসিবাদী ছাত্ররাজনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সংগঠনের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যে চেতনায় ছাত্রসমাজ উদ্বুদ্ধ হয়েছিল, ছাত্রশিবির আজ তার সম্পূর্ণ বিপরীত ধারায় অবস্থান করছে। তারা নামে-বেনামে সংগঠন তৈরি করে সহিংসতা, নারীর প্রতি ঘৃণা এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)-এর ছাত্রসংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশকারী গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ অভিযোগ করেছে, “এক সময় যেই শিবির রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার ছিল, আজ তারাই ক্যাম্পাসে গুপ্তচর রাজনীতির মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ধাঁচের কর্মসূচি পরিচালনা করছে। এটি শুধু দুঃখজনক নয়, ছাত্রসমাজের বিশ্বাসঘাতকতার সামিল।”
বিবৃতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতের কর্মসূচিতে বাধা এবং চট্টগ্রামে এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনাগুলোকে ছাত্রশিবিরের গোপন রাজনীতির বিপজ্জনক রূপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এতে বলা হয়, “এইসব ঘটনা গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে এবং শিক্ষা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ স্পষ্ট করে বলেছে, তারা বিশ্বাস করে ছাত্ররাজনীতি হবে উন্মুক্ত, স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের আহ্বান, ছাত্রশিবির যেন ছদ্ম পরিচয়ের আড়ালে গুপ্তচর রাজনীতি না করে সরাসরি উন্মুক্ত রাজনীতিতে অংশ নেয়। পাশাপাশি তারা সব ছাত্রসংগঠনকে একত্রিত হয়ে ‘উগ্রতা ও গুপ্তচর রাজনীতির’ বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে।
বিবৃতির শেষে ছাত্রসংগঠনটি জোর দিয়ে বলেছে, “এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। ক্যাম্পাসে গণতন্ত্রবিরোধী, গুপ্তচরধর্মী এবং নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে, নইলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আর একটি ফ্যাসিবাদী ছাত্ররাজনীতির ধ্বংসযজ্ঞে আটকে পড়বে।”