জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল—এমনটাই দাবি করেছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed), বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
“ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার কোনও যুক্তি নেই”
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার মতো একটি কারণও নেই। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে—বৈঠকে তা পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এখন প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টিভঙ্গির অপেক্ষায় আমরা। তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে নিরপেক্ষ অবস্থান নেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।”
তিনি আরও জানান, বৈঠকে তারা একটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন—নির্বাচনের আগে জরুরি যেসব সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলোর অধিকাংশই একমাসের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য। নির্বাচনমুখী সংস্কারগুলোর বাস্তবায়নে সরকার এবং আইন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যেগুলোর কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু প্রক্রিয়াধীন।
অগ্রাধিকার পেল সংবিধান ও সংস্কার
বৈঠকে সংবিধান সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনের প্রসঙ্গও উঠে আসে। সালাহউদ্দিন বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে সংবিধান ও সংস্কার-সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সব দলের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন উপদেষ্টা।”
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের সৌন্দর্য এটাই—সব বিষয়ে হয়তো একমত হওয়া যাবে না, কিন্তু আলোচনা করেই ঐকমত্যের কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব। আমরা সংবিধান নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব দিয়েছি। সেই প্রস্তাবগুলোর ওপর সরকার আন্তরিক মনোভাব দেখিয়েছে।”
সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট ও বিভ্রান্তি
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর আগেও সংস্কার কমিশনের কার্যক্রমে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিল। সালাহউদ্দিন বলেন, “সংস্কার কমিশন আমাদের এবং অন্যান্য দলের মতামতের ভিত্তিতেই রিপোর্ট তৈরি করেছিল। সেই রিপোর্ট আমরা দলে আলোচনা করেছি। তবে সম্প্রতি আমাদের কাছে একটি ১৬৬ প্রস্তাবের সংক্ষিপ্ত স্প্রেডশিট পাঠানো হয়, যেটিকে আমরা বিভ্রান্তিমূলক বলেই মনে করি। সেটিকে আমরা গুরুত্ব দিইনি। আমাদের ফোকাস ছিল বিস্তারিত রিপোর্টগুলোর উপরেই।”
তিনি শেষ করেন এই বলে, “প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশন ইতিমধ্যেই অনেক সময় নিয়েছেন। আমরা আশা করি, এই জুন মাসের মধ্যেই সবকিছু সংকলন ও চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।”