কারাফটকে মায়ের মুখ দেখলেন রাজশাহীর সাবেক এমপি আসাদ, চার ভাই পলাতক

মায়ের শেষ বিদায়ে কারাফটকেই দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেললেন রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ (Asaduzzaman Asad)। প্যারোলে মুক্তি না পেলেও, কারাফটকে এক ঝলক মায়ের মুখ দেখার অনুমতি পেয়েছিলেন তিনি। সোমবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের গেটের সামনেই একসময়ের এই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা তার ৮০ বছর বয়সী মা সালেহা বেগমের নিথর মুখ দেখেন শেষবারের মতো।

আওয়ামী লীগ (Awami League) রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত আসাদুজ্জামান ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে, সেই জয় বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ক্ষমতার পালাবদলে ৫ আগস্ট তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তার মা সালেহা বেগম সোমবার বিকেলে মৃত্যুবরণ করলে পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানানো হয়। কিন্তু নিরাপত্তা বিবেচনায় তা মঞ্জুর না হওয়ায়, কারাফটকেই শেষ দেখা সম্ভব হয় সাবেক এই এমপির।

লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়ার এই পরিবারে সাত ভাইবোনের মধ্যে পাঁচ ভাইই জড়িত আওয়ামী রাজনীতিতে। বর্তমানে আসাদুজ্জামান বন্দী অবস্থায়, আর বাকি চার ভাই আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানিয়েছে পারিবারিক সূত্র। তাই তারা কেউই মায়ের জানাজায় বা দাফনে অংশ নিতে পারেননি।

মায়ের মৃত্যুসংবাদে ছুটে এসেছিলেন তৃতীয় ছেলে আক্তারুজ্জামান। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন তিনি, জীবিকা নির্বাহ করেন প্রাইভেট কার চালিয়ে। যদিও তিনি বিকেলে বাসায় গিয়ে মায়ের মুখ দেখেছেন, তবুও নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনিও মায়ের জানাজায় অংশ নিতে পারেননি।

রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী নগরীর মহিষবাথান গোরস্থানে সালেহা বেগমের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। পুরো ঘটনাটি ঘিরে রাজশাহী শহরে এক ধরনের ভারী নীরবতা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে—একটি রাজনৈতিক পরিবারের দুর্দিন যেন ছায়া ফেলেছে ব্যক্তিগত বেদনাতেও।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *