জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরাতে নীতিগত সিদ্ধান্ত ইসির

নিবন্ধন হারানোর এক দশকেরও বেশি সময় পর, আবারও রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) স্বীকৃতি ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরিয়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসির সভায় এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (Abul Fazl Md. Sanaullah) এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ ও আইনগত পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নিয়েই জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সানাউল্লাহ জানান, দলটির আবেদন, ২০০৮ সালের নিবন্ধন প্রজ্ঞাপন এবং ‘স্ট্যাটাসকো এনটে’র ধারণা বিবেচনায় রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

“২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হলে প্রতীকও বাতিল হয়। কিন্তু তখন যেভাবে নিবন্ধন ও প্রতীক একসঙ্গে দেওয়া হয়েছিল, সেই বিষয়টি এখন পুনর্বিবেচনায় এসেছে,” জানান সানাউল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আবেদনের সঙ্গে একটি রিট পিটিশনের আদেশও কমিশনের কাছে উপস্থাপিত হয়। এতে বলা হয়, ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ব্যবহার ন্যায়বিচারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে—এই অভিযোগে একটি আপিল করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দেন। আদালতের ভাষ্য ছিল, নির্বাচনে এই প্রতীক ব্যবহারে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না। নির্বাচন কমিশনের মতে, সেই রায় এখনো বহাল রয়েছে।

ইসি কমিশনার বলেন, দলীয় প্রতীক ফেরানোর বিষয়টি একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে।

২০১৬ সালে তৎকালীন কমিশন আদালতের একটি ফুল কোর্ট সভার আলোকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক বাতিল করে। তবে সেই সিদ্ধান্তটি ছিল একটি প্রশাসনিক চিঠির ভিত্তিতে, যা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ইসির হাতে আসে। এবারের সিদ্ধান্ত সেই প্রশাসনিক নির্দেশনার বিপরীতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং প্রাসঙ্গিক আইন অনুসারে পুনরায় বিবেচিত হলো।

নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে জামায়াতের অতীত ভূমিকা, আইনি বিতর্ক এবং তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন আবারও নতুন করে আলোচনা শুরু হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *