ঈদের উৎসবকেও হার মানিয়েছে মুরাদনগরের ধামঘর ইউনিয়ন। সেখানে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (Kazi Shah Mofazzal Hossain Kaykobad)-এর আগমনকে ঘিরে দেখা গেছে জনতার বাঁধভাঙা ঢল, মুহুর্মুহু স্লোগান আর বিশাল মিছিল। সোমবার (৯ জুন) বিকেলে পরমতলা শব্দরখান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ যেন পরিণত হয় এক বিশাল জনসমুদ্রে।
ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কায়কোবাদ বলেন, “এই গ্রাম আমার, এই মানুষ আমার, আমি আপনাদের কামলা। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আপনাদের সেবক হিসেবেই থাকতে চাই।” তিনি বলেন, “এই ইউনিয়নে ফ্যাসিবাদের দোসর ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের জন্ম হলেও এখানকার জনগণ সবসময় আমাকে আপন করে নিয়েছে।”
সাবেক এই মন্ত্রী তার বক্তব্যের শুরুতেই কৃতজ্ঞতা জানান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman)-এর প্রতি এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া কামনা করেন। একইসঙ্গে তারেক রহমান যেন দেশে ফিরে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দিতে পারেন—এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন কায়কোবাদ।
তিনি বলেন, “এখন আমাদের একমাত্র কাজ হলো নির্বাচন। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকেই সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে বিএনপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় নিয়ে আসতে হবে। ইনশাআল্লাহ, বিএনপিই সরকার গঠন করবে।”
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে কায়কোবাদ বলেন, “শিশু উপদেষ্টাদের হাতে ছুরি ধরিয়ে দিয়ে যারা অপকর্মে উৎসাহ দিচ্ছে, সেই দায় সরকারের। ভবিষ্যতে এই সরকারকেও এসব অপরাধের জন্য জবাবদিহি করতে হতে পারে।”
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকার, সদস্য সচিব এফ এম তারেক মুন্সী, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ তৌফিক মীর, সিনিয়র সদস্য মোল্লা মহিউদ্দিন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। সঞ্চালনায় ছিলেন ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন খোকন ও উপজেলা যুবদলের সদস্য কাউসারউল্লাহ সাইফি।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন—শিল্পপতি কাজী জুননুন বশরী, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা মজিবুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, নজরুল ইসলাম, ফারুক সরকার মজিব, সোহেল আহমেদ বাবু, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট তৌহিদুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি চৌধুরী রকিবুল হক শিপন।
উপজেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতৃত্বও ছিল চোখে পড়ার মতো। বক্তব্য দেন যুবদলের আহ্বায়ক সোহেল সামাদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা, সদস্য সচিব সৈয়দ হাসান আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ বাদশাহ।
ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী কমিটির সদস্য সচিব নাহিদুল ইসলাম নাঈম। বক্তব্য দেন উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নাজিমুদ্দিন, সদস্য সচিব সুমন মাস্টার। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধামঘর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দুলাল সরকার।
জনগণের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, মুরাদনগরে এখনো কায়কোবাদ নামটি রাজনীতির এক শক্তিশালী প্রতীক।