পার্শ্ববর্তী ভারতে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (Directorate General of Health Services)। সোমবার সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. হালিমুর রশিদের সই করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভারতে এবং অন্যান্য কয়েকটি দেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন সাব ভেরিয়েন্ট—বিশেষত অমিক্রনের এলএফ.৭, এক্সএফজি, জেএন-১ ও এনবি ১.৮.১-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে এসব দেশে ‘জরুরি প্রয়োজন ছাড়া’ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে এই নতুন সাব ভেরিয়েন্টগুলো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই দেশের প্রতিটি স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরের আইএইচআর (IHR-2005) স্বাস্থ্য ডেস্কে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং ও সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার ও ডিজিটাল হ্যান্ড হেল্ড থার্মোমিটার দিয়ে ‘নন টাচ টেকনিক’-এর মাধ্যমে ভ্রমণকারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস এবং পিপিই মজুদ রাখতে বলা হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত প্রচার চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- প্রয়োজনে দিনে বারবার অন্তত ২৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া
- নাক-মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার করা
- আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা
- চোখ, নাক ও মুখে অপরিষ্কার হাত না দেওয়া
- হাঁচি-কাশির সময় বাহু, টিস্যু বা কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখা
এছাড়াও, সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মারাত্মক অসুস্থতা দেখা দিলে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে এবং রোগীর নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক পরাতে বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে আইইডিসিআর (IEDCR)-এর হটলাইন নম্বরে: ০১৪০১-১৯৬২৯৩।
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারের এই পদক্ষেপকে অনেকেই সময়োপযোগী বললেও, এর কার্যকারিতা নির্ভর করবে কতটা সক্রিয়ভাবে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন করা হয় তার ওপর। করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের হুমকির মধ্যে এই সতর্কতা কেবল নির্দেশনা নয়—এটা দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান।