আগামী বছরের মাঝামাঝি ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হতে পারে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে তারেক রহমান (Tarique Rahman) এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–এর এক বৈঠকে এই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে। বৈঠকে তারেক রহমান আগামী রমজানের আগে ভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিলে প্রধান উপদেষ্টা এ প্রস্তাবে সম্মতি জানান এবং বলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রোজার আগের সপ্তাহেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।
এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ভোটের সময়সূচি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা) শুরু হওয়া বৈঠক শেষ হয় সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ৩টা)। বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত যৌথ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান (Khalilur Rahman), প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury)।
বিএনপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচন আয়োজনের জন্য ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। কারণ চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে পবিত্র রমজান। সেই হিসেবে ভোটের উপযুক্ত সময় হতে পারে ১২ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। সরকারি ছুটি বিবেচনায় এই তারিখে ভোট আয়োজনের বাস্তবতা বেশি।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) গুলশানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে নির্বাচন আয়োজনে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের পূর্ব প্রস্তুতি, আইনি কাঠামো এবং প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস—এই তিনটি দিকেই ইতিবাচক অগ্রগতি প্রয়োজন হবে।”
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারেক রহমান জানান, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও মনে করেন, রমজানের আগে নির্বাচন আয়োজন হলে তা দেশের জন্য ভালো হবে। প্রধান উপদেষ্টা এ অবস্থানকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন এবং বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি নিশ্চিত করা গেলে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রধান উপদেষ্টা আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে সাংবিধানিক প্রস্তুতি এবং আইনি জটিলতা নিরসনের ওপর।
বৈঠক শেষে উভয়পক্ষ একে অপরকে ধন্যবাদ জানান। তারেক রহমান বলেন, “আমরা একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একসাথে কাজ করতে প্রস্তুত।” অন্যদিকে, ড. ইউনূস বলেন, “ফলপ্রসূ আলোচনা আমাদের একটি বাস্তবসম্মত সমাধানের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।”