অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনে এখনো যেসব ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের দ্রুত অপসারণ না করলে তাদের নাম প্রকাশ করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে—এই কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (Syed Moazzem Hossain Alal)। শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আলাল বলেন, “এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসরেরা বাসা বেঁধে আছে। দুর্নীতি আগের মতোই চলছে, মানুষের অধিকারও বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা জানি, কারা কোথায় বসে সেই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এখনই সাবধান হোন, নয়তো আমরা তালিকা প্রকাশে বাধ্য হব।”
আলাল আরো বলেন, আগামী জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হবে। এর আগে যদি প্রশাসন থেকে এই দোসরদের অপসারণ ও গ্রেপ্তার না করা হয়, তাহলে বিএনপি প্রকাশ্যে নাম-ঠিকানাসহ তাদের তালিকা প্রকাশ করবে। তিনি বলেন, “প্রশাসনের কোন পর্যায়ে, কোথায় তারা অবস্থান করছে, তা আমরা জাতির সামনে তুলে ধরব।”
সরকারের ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে আলাল বলেন, “দশ মাস হতে চলেছে, অথচ অন্তর্বর্তী সরকার এখনও জনগণকে কিছু দিতে পারেনি। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামেনি, গ্যাস সংকট বেড়েছে, লোডশেডিং নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির সরবরাহ ব্যাহত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও ভেঙে পড়েছে। এই সরকার পদে পদে জনগণকে হতাশ করছে।”
নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা জনগণের পাশে আছি বলেই নির্বাচনের কথা বলি। কিন্তু যখন নির্বাচনের কথা তুলি, তখন উপদেষ্টা পরিষদ গোসসা করে বসে। অথচ একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে মানুষ যেকোনো সময় যেতে পারে, জবাবদিহি চাইতে পারে। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের কাছে সেই অধিকারটুকু পর্যন্ত নেই—সেখানেও দেয়াল তুলে রাখা হয়েছে, স্বৈরতান্ত্রিক মানসিকতা এখনো বলবৎ রয়েছে।”
আলালের বক্তব্যে স্পষ্ট—বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিচ্ছে, কিন্তু সেটা সীমিত। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে প্রশাসনের গোপন শক্তি ও স্বৈরতান্ত্রিক যোগসাজশ জাতির সামনে উন্মোচন করা হবে।