“পাল্টা আক্রমণ করলে বহুগুণ বেশি শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে” – ইরানকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইরান যদি পাল্টা আক্রমণে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র “অত্যন্ত শক্তিশালী” জবাব দেবে। স্থানীয় সময় শনিবার রাতে ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পোস্ট দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “ইরান যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পাল্টা আক্রমণ চালায়, তাহলে তা আজ রাতে যা ঘটেছে, তার চেয়েও বহুগুণ বেশি শক্তি দিয়ে জবাব দেওয়া হবে। ধন্যবাদ!” — প্রেসিডেন্ট অব দ্য ইউনাইটেড স্টেটস।

এর আগে, জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি হামলার বিষয়টি নিয়ে সরাসরি বলেন, “আজ রাতে আমি বিশ্বকে জানাতে পারি—এই হামলা ছিল একটি চমৎকার সামরিক সাফল্য।” ভাষণে ট্রাম্প একদিকে যেমন হামলার ‘সফলতা’ তুলে ধরেন, তেমনি অন্যদিকে ইরানকে সামনে থাকা ‘ট্র্যাজেডি’র ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “এখন হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এমন এক ট্র্যাজেডি অপেক্ষা করছে, যা গত আট দিনে দেখা ঘটনার চেয়েও ভয়াবহ হবে।”

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এদিন আরও বলেন, “আমাদের এখনো অনেক টার্গেট বাকি রয়েছে। আজকের লক্ষ্যটি ছিল সবচেয়ে কঠিন এবং সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী। কিন্তু যদি দ্রুত শান্তি না আসে, তবে আমরা বাকি লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আঘাত হানব—নিখুঁততা, গতি ও দক্ষতার সঙ্গে।”

হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেন, শনিবার রাতে ইরানের যেসব পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে, তার লক্ষ্য ছিল মূলত ‘পারমাণবিক হুমকি’ বন্ধ করা। “আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং বিশ্বের এক নম্বর রাষ্ট্র সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক দ্বারা সৃষ্ট পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা,” বলেন তিনি।

এই ভাষণে তিনি ফের স্মরণ করিয়ে দেন, ৪০ বছর ধরে ইরান ‘আমেরিকার মৃত্যু’, ‘ইসরায়েলের মৃত্যু’ বলেই আসছে। ট্রাম্প বলেন, “তারা রাস্তার পাশে বোমা পেতে আমাদের জনগণকে হত্যা করছে, তাদের হাত-পা উড়িয়ে দিচ্ছে। এটাই ছিল তাদের বিশেষত্ব। আমরা ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে হারিয়েছি, আর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের ঘৃণার সরাসরি ফলস্বরূপ মারা গেছে।”

ট্রাম্প সরাসরি ইঙ্গিত দেন ইরানি জেনারেল কাসেম সোলেইমানির দিকে। “তাদের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি এত লোককে হত্যা করেছেন,” বলেন তিনি। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকে ড্রোন হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নিহত হন সোলেইমানি, যা তখনও বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দেয়। ওই সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্প বলেছিলেন, এটি ছিল প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ।

সবশেষে ট্রাম্প বলেন, “আমি অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমি এটি হতে দেব না। এটি আর চলবে না।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *