“দুর্নীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আসিফ, তাঁর ফাঁসি হওয়া উচিত”—বিস্ফোরক অভিযোগ তারেক রহমানের

রাজনীতির মঞ্চে ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন দুই তরুণ নেতা—ইশরাক হোসেন ও মো. আসিফ। আর এই উত্তাপের কেন্দ্রে আছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি স্পষ্টভাবেই অভিযোগ তোলেন, মো. আসিফ দুর্নীতির এমন পর্যায়ে পৌঁছেছেন, যে তার ফাঁসিই হওয়া উচিত।

তারেক রহমানের বক্তব্যে উঠে এসেছে, “আসিফ (Md. Asif) একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ছত্রচ্ছায়ায় রাজনৈতিক ক্ষমতায় উঠে এসেছেন। একজন ১৫০ টাকার ছেলে ‘বাই চান্স’ রাজনীতিতে ঢুকে দুর্নীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন।” তারেকের অভিযোগ অনুযায়ী, সরকারি নিয়োগ, ডিও লেটার বাণিজ্য ও প্রশাসক পদে অবৈধ নিয়োগ নিয়ে আসিফের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, “প্রশাসক নিয়োগে গোপনে ভাইভা নেওয়া হয়েছে মহাখালীর একটি ভবনে, যেখানে এনসিপির মাধ্যমে সাক্ষাৎকার চলেছে। এমনকি রুপায়ন টাওয়ার-এ দায়িত্ব বণ্টন নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে, যার সঙ্গেও আসিফ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।” তারেকের কথায়, “এতগুলো কেলেঙ্কারি সামনে এসেছে যে তার বিচার হলে ফাঁসি হওয়ারই কথা।”

অন্যদিকে, তারেক রহমান ইশরাক হোসেনকে নিয়ে ভিন্ন সুরে কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, “ইশরাক (Ishraque Hossain) কখনও শপথই নেননি, তাহলে মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রশ্ন আসে না। বরং আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনিই বৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাহলে তাঁকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না?” তারেক এটিকে স্পষ্টভাবে ‘নির্বাচনী বৈষম্য’ আখ্যা দেন।

তারেক আরও অভিযোগ করেন, “চট্টগ্রামে অনুরূপ পরিস্থিতিতে এক প্রার্থীকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, অথচ ঢাকায় ইশরাক বঞ্চিত। এটি সুস্পষ্ট রাজনৈতিক বৈষম্য।”

সামাজিক মাধ্যমে আসিফের জনপ্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারেক। তাঁর দাবি, “বিদেশি বট ব্যবহার করে লাইক-কমেন্ট বাড়িয়ে কৃত্রিম জনপ্রিয়তা তৈরি করছেন আসিফ। অথচ মাঠপর্যায়ে তার প্রতি জনগণের আস্থা নেই।”

টকশোর এক পর্যায়ে তারেক মন্তব্য করেন, “এমন একজন তরুণ যিনি দুর্নীতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন, তাঁকে বহাল রাখাটা সরকারের জন্য লজ্জাজনক।” পাশাপাশি, জামায়াত, এনসিপি, জাতীয় পার্টির মতো দলগুলোর অবস্থান পরিবর্তন নিয়েও সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট ভাষ্য, “আমরা ধানের শীষ প্রতীকে ফিরতে চাই না, সম্মানের সঙ্গে আলাদা অবস্থানে থাকতে চাই।”

বক্তব্যের শেষ দিকে তারেক রহমান বলেন, “নির্বাচনের আগমুহূর্তে যেভাবে দুর্নীতি ও বৈষম্যের সংস্কৃতি ছড়াচ্ছে, তা জনমনে গভীর অনাস্থার জন্ম দিচ্ছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে, সমান আচরণ ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *