বিতর্কের ঝড় তুললেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল (Masud Kamal)। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি সরাসরি সমালোচনার তীর ছুঁড়লেন আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud) এবং অনর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ার দিকে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন—“ইশরাক হোসেন আন্দোলন না করলে কী হতো? দক্ষিণে আরেকজন এজাজকে এনে বসানো হতো?”
এই কথার পেছনে তিনি ইঙ্গিত দেন, যদি ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain) মাঠে না নামতেন, তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (Dhaka South City Corporation) পরিচালনার দায়িত্ব হয়তো চলে যেত এমন একজনের হাতে, যিনি শুধুই রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা দিয়ে নির্বাচিত—যেমনটা ঘটেছে উত্তরে।
উত্তরের উদাহরণ টেনে মাসুদ কামাল বলেন, “আরেকটা এজাজকে এনে বসাতো”—ইঙ্গিত করছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ (Mohammad Ejaz)-এর প্রতি, যিনি এক উপদেষ্টার ‘ফুফাতো ভাই’ বলেই পদ পেয়েছেন, এমনই অভিযোগ তাঁর।
এ নিয়ে আসিফ মাহমুদের প্রতিক্রিয়া নিয়েও কটাক্ষ করেন মাসুদ কামাল। তিনি বলেন, “আপনার দিন ক’টা হলো? এর মধ্যে আপনি এত জেনে গেলেন যে এজাজ একজন ‘যোগ্য’ লোক? কে আপনি, ভাই?” এরপর যোগ করেন, “আপনার ইচ্ছেমতো দেশ চলবে? এটা তো হাসিনার হিসাবও আউট হয়ে গেছে।”
আসিফ মাহমুদকে উদ্দেশ্য করে মাসুদ কামালের আরো প্রশ্ন—“আপনার মনে হওয়ার ভিত্তিটা কী? আপনাকে একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা পালন করুন। আপনাকে ইচ্ছেমতো চালানোর জন্য বসানো হয়নি।”
অনর্বর্তী সরকারের দিকেও সরাসরি আঙুল তোলেন তিনি। বলেন, “প্রথমেই তাদের এই উপলব্ধিটা থাকা উচিত ছিল যে তারা একটা অনর্বর্তী সরকার। দীর্ঘমেয়াদি থাকার জন্য নয়, বরং দ্রুত দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্যই তাদের থাকা দরকার ছিল। আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলোর মধ্যেও আমরা এই মানসিকতা দেখেছি।”
তবে বর্তমান সরকারকে তিনি ব্যতিক্রম বলেই মনে করেন। তার মতে, “এরা বলে তারা ট্র্যাডিশনাল তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, এদের অনেক ক্ষমতা আছে। কিন্তু এই সব কিছু করতে গিয়েই তারা আজকে এক ‘লেজেগোবরে’ অবস্থায় পড়ে গেছে।”
এই সঙ্কটের কেন্দ্রে আছেন এক উপদেষ্টা—এমনটাও অভিযোগ করেন মাসুদ কামাল। তার ভাষায়, “একজন উপদেষ্টার গোয়ার্তমির কারণে পুরো সরকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। নিরপেক্ষতা বলে তাদের যে কিছু ছিল, সেটাও আজ প্রশ্নবিদ্ধ।”
এই ইস্যুর সূত্র ধরে তিনি মন্তব্য করেন, “মানুষ এখন বুঝে গেছে এই সরকার আদৌ নিরপেক্ষ থাকতে পারছে না।”