ভূতুড়ে মামলায় বারবার রিমান্ড, আদালতে প্রশ্ন তুললেন শাজাহান খান

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আলোচিত সাজেদুর রহমান ওমর হত্যা মামলায় সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান (Shajahan Khan)-এর দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। সোমবার (২৩ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

শুনানিকালে নিজেই বক্তব্যে অংশ নিয়ে শাজাহান খান রিমান্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ওমর ফারুক ফারুকী (Omar Faruk Faruki)-কে উদ্দেশ করে বলেন, “বিজ্ঞ পিপি সাহেব, উনি তো বিএনপির বড় নেতা। ভূতুড়ে মামলায় বারবার আমাদের রিমান্ডে নিচ্ছেন কেন?”

জবাবে পিপি ওমর ফারুক বলেন, “তারা তো সাধারণ আসামি নন। তারা গণভবনে নীতিনির্ধারণী বৈঠক করেছেন। শাজাহান খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তারা মিডিয়ায় এসেই বলেছে—আন্দোলনকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না, দমন করা হবে। আমরা কোনো মামলা করিনি। ভুক্তভোগীদের স্বজনরাই করেছে। আমরা কেবল শুনানি করি।”

আদালত ওইদিন একই মামলায় আরও দুই রাজনৈতিক ব্যক্তি—আনিসুল হক (Anisul Huq) ও সালমান এফ রহমান (Salman F Rahman)-এরও দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ড আদেশের পর আদালতের এজলাস থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসিমুখে শাজাহান খান বলেন, “তোমরা কেমন আছো?” এক সাংবাদিকের উত্তরে “ভালো” শুনে তিনি জানান, “আমি ভালো আছি।” এরপর বলেন, “এক হাতে তালি বাজে না। ওই সময় মব তৈরি করে মানুষ হত্যা করলো—সেই বিচার হবে।”

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ২১ জুলাই দুপুরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন যুবক সাজেদুর রহমান ওমর। বিকেলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হলে তিনি আহত হন এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট তিনি মারা যান।

ঘটনার প্রায় পাঁচ মাস পর, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি, ওমরের স্বজন সৈয়দ তানভীর আহমেদ যাত্রাবাড়ী থানা-তে মামলা করেন। এতে ৮১ জনকে আসামি করা হয়, যার মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)।

এ মামলাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। একদিকে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের রিমান্ডে নেওয়া, অন্যদিকে ‘ভূতুড়ে মামলা’ বলে অভিযুক্তদের ভাষ্য—এই দুটি অবস্থান নতুন করে প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক প্রভাব ও আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *