ভোটে না যাওয়া মানুষেরা রাজনীতি শেখাচ্ছে: গোলাম মাওলা রনি

রাজনীতিতে দীর্ঘ তিন থেকে চার দশকের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও আজ যারা রাজনীতি কখনও চর্চা করেননি, তারাই ‘নির্বাচন কেমন হওয়া উচিত’—সে বিষয়ে জ্ঞান দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন—এমন অভিযোগ তুলেছেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি (Golam Mawla Rony)। এক টেলিভিশন টকশোতে অংশ নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রের পথ পর্যন্ত চেনেন না এমন মানুষ এখন নীতি-নৈতিকতার পাঠ দিচ্ছেন।

রনি বলেন, “আমরা ৩৫ থেকে ৪০ বছর ধরে রাজনীতির পেছনে সময়, অর্থ, শ্রম ও জীবন দিয়ে চলেছি। যা উপার্জন করেছি তার ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জনগণের জন্য ব্যয় করেছি। কেউ কেউ তার চেয়েও বেশি দিয়েছেন। অথচ আজ যারা রাজনীতির গন্ধ পর্যন্ত পাননি, তারাই আমাদের শেখাচ্ছেন রাজনীতি কীভাবে করতে হয়।”

সংস্কার বিষয়ে হতাশা প্রকাশ

বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কারের প্রচেষ্টাকে ‘ভোগাস থিউরি’ আখ্যা দিয়ে রনি বলেন, “এখানে কোনো সংস্কার হচ্ছে না। শুধু সময়, অর্থ ও শক্তির অপচয় হচ্ছে। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের উপজেলা কমিটি গঠনে হিমশিম খায়, কমিটি হলেও ঝাড়ু মিছিল হয়—সেখানে সবগুলো দলকে ঐকমত্যে আনা, এই থিউরিটাই অবাস্তব। এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আজ যা কিছু হচ্ছে, কাল যদি ক্ষমতায় গিয়ে কেউ বলে, আমি এগুলো মানবো না—তাহলে কিছুই করার থাকবে না। সবকিছু নির্ভর করছে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ওপর। এখন যা কিছু করা হচ্ছে, তা আদতে নির্বাচন বা সংস্কারের জন্য নয়। এর পেছনে রয়েছে অদৃশ্য কিছু বিষয়।”

জামায়াত-এনসিপি নিয়ে মন্তব্য

রনি মন্তব্য করেন, বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মনে হয় যে, জামায়াত (Jamaat) ও এনসিপি (NCP) এখন এতটাই ক্ষমতাবান যে, “তাদের সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য বড় বড় মানুষ পর্যন্ত মরিয়া হয়ে পড়ছেন। কিছু কিছু মানুষ তো তাদের কাছে করুণা পর্যন্ত চাইছেন।”

রাজনৈতিক বাস্তবতায় এমন উক্তিগুলো প্রমাণ করে যে, অভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং অতীতের অবমূল্যায়ন বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও সংস্কার প্রচেষ্টাকে আরো দুর্বল করে তুলছে। রনির মন্তব্যে অসন্তোষ ও দীর্ঘদিনের ত্যাগের গ্লানি স্পষ্ট।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *