জুলকারনাইন সায়ের (JulkarNain Sayar) সম্প্রতি তাঁর ফেসবুক পেজে একটি বিস্ফোরক পোস্ট দিয়ে ফের আলোচনায় উঠে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে বর্তমানে ১৪৭টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে—এমন অনেক দল রয়েছে যাদের সদস্য সংখ্যা হয়তো ১০ জনও পূর্ণ হয় না। অথচ তারাও রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়।
তিনি সতর্ক করেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, সেই নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। তার মতে, সামনে এমন একটি রাজনৈতিক জোট গড়ে উঠতে পারে যারা সংঘবদ্ধভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করতে পারে। এই সম্ভাব্য জোট তৈরির প্রস্তুতিও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
জুলকারনাইন সায়ের মনে করেন, যারা এখন নিবন্ধনের জন্য ভিড় করছেন, তাঁদের অনেকেই হয়তো নিবন্ধন লাভ করে ফেলবেন। একবার নিবন্ধিত হলে, জোট গঠনের জন্য আর জনসমর্থন বা সদস্যসংখ্যা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায় না—মূল আলোচনায় চলে আসে ‘কতগুলো দল’ একত্র হয়ে নির্বাচন বর্জন করেছে, সেই সংখ্যা। এভাবে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করার প্রবণতা চলছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
পোস্টের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশে তিনি তুলে ধরেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিকে একটি “হোস্টেজ” করে নির্বাচন প্রহসনে বাধ্য করার প্রসঙ্গ। তাঁর দাবি, এই প্রক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন একজন অজ্ঞাতনামা “ব্যারিস্টার সাহেব”, যিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীসভায় ছিলেন এবং যাঁকে তিনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের পুরনো কারিগর হিসেবে আখ্যা দেন।
এই ব্যারিস্টার ২০১৪ সালের নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এরশাদকে জোর করে সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানোর পেছনেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সায়ের। তাঁর মতে, এই ব্যক্তিকে সেই সময় কিংবা পরবর্তী ৫ আগস্ট ২০২৪-এর রাজনৈতিক পালাবদলের সময়েও বড় কোনো বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়নি। বরং, তিনি এখন নতুনভাবে রাজনৈতিক শক্তি গঠনে তৎপর এবং তাঁকে ঘিরে গড়ে উঠছে একটি সংগঠিত বলয়—যার পেছনে রয়েছে দেশি-বিদেশি প্রভাবশালী শক্তির প্রত্যক্ষ সমর্থন।
জুলকারনাইন সায়ের ইঙ্গিত করেন, এই শক্তির পেছনে প্রতিবেশি একটি রাষ্ট্রের মদদ রয়েছে এবং সেই রাষ্ট্রের ছায়াতলে থেকেই উক্ত ব্যারিস্টার দেশের রাজনীতিকে নানা সময় কলুষিত করেছেন। তাঁর মতে, এরশাদ যখন জীবিত ছিলেন, তখন এই ব্যারিস্টারকে ‘বেইমান’ বলে অভিহিত করাটা কাকতালীয় ছিল না—তার পেছনে ছিল বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ক্ষোভ।
সবশেষে, তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, যেখানে প্রায় সব সাবেক আওয়ামী মন্ত্রী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে দেশ ছেড়ে রয়েছেন, সেখানে এই ব্যারিস্টার সাহেবের কন্যাকে সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটি কেবল একটি নিয়োগ নয়, বরং নতুন করে একটি ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশলেরই অংশ বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।