মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (National Committee Against Discrimination or NCP)-এর জেলা কমিটির সভা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয় বুধবার (২৫ জুন) বিকেলে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে ওই কমিটির সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহকে প্রকাশ্যে হাতুড়িপেটা করে গুরুতর আহত করেছে একই সংগঠনের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ।
ঘটনাটি ঘটে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে, শহরের ভুইয়া কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনের সময়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসুম বিল্লাহ ও স্বাস্থ্য উপকমিটির সদস্য হাসিবুল্লাহর মধ্যে বহুদিন ধরেই টানাপড়েন চলছিল। সেই বিবাদেরই বিস্ফোরণ ঘটে এই সম্মেলনে।
একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, এই সহিংস ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী হাসিবুল্লাহ (Hasibullah) নেতৃত্বাধীন গ্রুপ। সংঘর্ষের সময় মাসুম বিল্লাহকে ঘিরে ধরে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে দ্রুত ঢাকায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Dhaka Medical College Hospital) পাঠানো হয় উন্নত চিকিৎসার জন্য।
সংগঠনের মাদারীপুর শাখার আহ্বায়ক নেয়ামতউল্লাহ (Neyamatullah) এ হামলার জন্য ‘সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “আজকের সভায় সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। এরা আসলে এনসিপিতে ঢুকেছে আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। জেলা কমিটি গঠনকালেই আমরা এই ষড়যন্ত্র বুঝে সেই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, এই হামলা শুধুই মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে নয়, এটি পুরো এনসিপিকে দুর্বল ও বিভক্ত করার গভীর রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম (Jahangir Alam) ‘কালবেলা’কে বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে, দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারা জড়িত এবং কেন হামলা করেছে তা বিস্তারিত তদন্তের পর বলা যাবে।”
ঘটনাটি জেলা রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দৃষ্টিতেও এটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার—দুই মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
