“যারা নির্বাচনকে ভয় পায়, তারাই এখন ‘নন ইস্যু’কে ‘ইস্যু’ বানিয়ে নর্বাচন বানচালে মরিয়া”

নির্বাচনকে বিলম্বিত ও অনিশ্চিত করতে নানা কৌশল গ্রহণ করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে বিএনপির (BNP) যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, “যারা নির্বাচনকে ভয় পায়, তারাই এখন ‘নন ইস্যু’কে ‘ইস্যু’ বানাতে মরিয়া।”

রবিবার বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সদর ইউনিয়নের বিএনপির এক কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। প্রিন্স বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করতেই তাদের অনুগত অংশীদাররা তর্কযুদ্ধের মাধ্যমে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে তুলছে। এই প্রক্রিয়া আধিপত্যবাদী শক্তির প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে বলেও তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের ‘প্রহসনের নির্বাচনের’ শরিক একটি দলের নেতা সম্প্রতি ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার ‘গ্যারান্টি’ জানতে চেয়েছেন। এর জবাবে প্রিন্স বলেন, “আমাদের একমাত্র গ্যারান্টি—উপরে আল্লাহর ওপর ভরসা, আর নিচে জনগণের ওপর আস্থা।”

বারবার জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত একটি শ্রেণি এখন কূটকৌশলের মাধ্যমে নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে জানান, বিএনপির আসনের দাবি করে কিছু অংশবিশেষ সংগঠনকে চাপে রাখার অপচেষ্টায় লিপ্ত।

তিনি আরও বলেন, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে রোজার আগেই নির্বাচনের টাইমলাইন নির্ধারিত হওয়ার পর থেকে কিছু দল ‘দিশেহারা’। তারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে, কিংবা সুযোগ পেলে সম্পূর্ণভাবে ভন্ডুল করতে, বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের নামে নতুন জটিলতা সৃষ্টি করছে।

সমাবেশে তিনি নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানান এবং স্মরণ করিয়ে দেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে রোজার আগে নির্বাচন আয়োজনের ঐকমত্য হয়েছে। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা না হলে বিএনপি ঘরে বসে থাকবে না। রাজপথেই ফয়সালা নিতে হবে।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবির।

অনুষ্ঠানে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম বলেন, “সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করে আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে হবে।” সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়্যারেস আলী মামুন বলেন, “যারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায়, তারা জনগণকে ভয় পায়।”

সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ দলের নেতা-কর্মীদের একই সঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “প্রত্যাশিত সময়ে নির্বাচনের আলামত না থাকলে আবার রাজপথেই নামতে হবে।”

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এ.কে.এম এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, হালুয়াঘাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, আলী আশরাফ, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, মিজানুর রহমান মিজান, শফিকুর রহমান, ও মনায়েম হোসেন খান খোকন প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *