ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স কারা পান? উপদেষ্টা আসিফ কি সেই ক্যাটাগরীতে পড়েন?

সরকারি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সম্প্রতি এক বক্তব্যে জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে তাঁর কাছে লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। তবে এই ঘোষণার পরেই উঠেছে একাধিক প্রশ্ন—আসলে বাংলাদেশে কারা এই লাইসেন্স পেতে পারেন? আসিফ মাহমুদ কি বৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার সব শর্ত পূরণ করেছেন?

বাংলাদেশ সরকারের file.portal.gov.bd-এ প্রকাশিত নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যক্তিগত আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সের জন্য নির্দিষ্ট কিছু কঠোর শর্ত পূরণ করতে হয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  1. আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

  2. শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সী যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন।

  3. আবেদনকারীর ‘ব্যক্তি শ্রেণির’ আয়করদাতা হওয়া বাধ্যতামূলক।

  4. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত—আবেদনকারীকে অবশ্যই আগের তিন বছর ধারাবাহিকভাবে:

  5. পিস্তল/রিভলবার/রাইফেলের ক্ষেত্রে প্রতি বছর ৩ লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে, অথবা
  6. শটগানের ক্ষেত্রে প্রতি বছর ১ লাখ টাকা আয়কর দিতে হবে।

এই কর পরিশোধের প্রমাণ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিল করতে হয়।

এখানেই প্রশ্ন উঠেছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud)–এর অস্ত্র লাইসেন্স প্রাপ্তির প্রক্রিয়া নিয়ে।
তাঁর বয়স ৩০-এর বেশি বলে অনুমান করা যায়, তবে বিগত তিন বছরে তিনি ধারাবাহিকভাবে উল্লিখিত পরিমাণে আয়কর পরিশোধ করেছেন কিনা, সে সম্পর্কে এখনো কোনো তথ্য জনসমক্ষে আসেনি।

বিশেষ কোনো ছাড় পেয়েছেন কি?
সরকারি বা মন্ত্রীপদমর্যাদার কোনো সুযোগ-সুবিধার কারণে কি তিনি আয়কর প্রদানের নিয়ম থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন? আর যদি তাই হয়, তাহলে তাঁর অস্ত্র কেনার অর্থের উৎস কী? অস্ত্রটি কোথা থেকে কেনা হয়েছে?—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এখনো অজানা।

এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদের পক্ষ থেকে কোনো বিস্তারিত ব্যাখ্যা বা দালিলিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে যেহেতু বিষয়টি সরাসরি ব্যক্তিগত অস্ত্রধারিতার বৈধতা ও প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই জনমনে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

জনগণ এখন জানতে চায়—নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্র রাখা হচ্ছে, না কি সরকারি পদমর্যাদা ব্যবহার করে নিয়মের বাইরে গিয়েই নেওয়া হয়েছে অস্ত্রের লাইসেন্স?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *