জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে দেখেন গোপন রুমে—এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাহিরার নাটকীয় উদ্ধারের গল্প

এইচএসসি পরীক্ষার্থী মাহিরা বিনতে মারুফ পুলি (Mahira Binte Maruf Puli) রবিবার সকালে মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজে দ্বিতীয় পরীক্ষায় অংশ নিতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছানো তো দূরের কথা, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই অজানা এক নারীর হাতে চেতনানাশক গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে যান মাহিরা। পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার স্মৃতি হারিয়ে ফেলেন তিনি। জ্ঞান ফিরে তাকেই আবিষ্কার করেন এক অচেনা কক্ষে, ঘিরে আছে নিঃসন্দেহে রহস্য।

মাহিরার বাড়ি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়, আর তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল মিরপুর কলেজ। ২৯ জুন সকাল আটটায় বের হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় তার খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার যোগাযোগ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে। সেখানেই জানা যায়—মাহিরা পরীক্ষা দিতে আসেননি।

পরিবার খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। খবরটি গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে র‍্যাব-৪-এর। এরপর তারা ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত সাভার (Savar) এলাকায় মাহিরার সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করে।

র‍্যাব-৪-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপস) কে এন রায় নিয়তি সোমবার জানান, রবিবার রাতে সাভারের একটি অজ্ঞাত বাসা থেকে মাহিরাকে উদ্ধার করা হয়। মাহিরার বর্ণনায় উঠে আসে, বাসা থেকে বের হওয়ার পরপরই একজন নারী তার সামনে এসে কথা বলেন। কথা বলার এক পর্যায়ে সেই নারী তার নাকের সামনে কিছু ধরেন, যার ফলে মুহূর্তেই অজ্ঞান হয়ে যান মাহিরা। এরপর কী ঘটেছে, তিনি কিছুই মনে করতে পারেননি। জ্ঞান ফেরার পর আবিষ্কার করেন, তিনি একটি অচেনা রুমে আছেন।

মেয়েটি জানান, পরে সুযোগ বুঝে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। ওই সময় র‍্যাবের টহল দল নির্দিষ্ট অবস্থান নিশ্চিত করে তাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে প্রাথমিক আইনি প্রক্রিয়া শেষে মাহিরাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

মাহিরার বাসা ঢাকার ভাটারা থানার জগন্নাথপুর এলাকার কেবি বিল্ডিংয়ে। তার বাবার নাম মো. আবদুল্লাহ আল মারুফ এবং মা রেহানা পারভীন।

ঘটনার পেছনে কারা ছিল, কী উদ্দেশ্যে এমন পরিকল্পিত অপহরণ ঘটেছে—সেসব নিয়ে এখনো রয়েছে বহু প্রশ্ন। তদন্ত চলছে। আপাতত মাহিরাকে সুস্থ অবস্থায় ফিরে পাওয়া গেছে, যা পরিবার ও সাধারণ মানুষের জন্য এক স্বস্তির খবরে পরিণত হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *