বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আল জাজিরা (Al Jazeera)-র এক অনুসন্ধানী সাংবাদিকের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। যদিও নাম উল্লেখ করেননি, তবে রাজনীতিসচেতন নাগরিকরা পোস্টটি পড়েই বুঝে নিচ্ছেন যে এতে ইঙ্গিত করা হয়েছে ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud)-এর দিকেই।
পোস্টে তিনি লিখেছেন:
“সাধারণ নাগরিকদের জীবন সাধারণই থেকে যায়, তাঁরা আংগুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যায়না, তাঁরা জীবনে প্রথম সুইজারল্যান্ড গিয়ে আরেকজনের টাকায় ফেন্ডির জ্যাকেট, ডিজাইনার ঘড়ি কেনেনা। মন চাইলেই দুবাই উড়াল দেয়না, আর মানুষের দেয়া টাকায় দুবাই মলে শপিং করে বেড়ায় না। সাধারণ নাগরিকেরা কন্ট্রাক্ট ম্যানিপুলেট করে অর্থ লোপাট করেনা, নিষিদ্ধ গোষ্ঠির লোকের হাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা তুলে দিয়ে তার মাধ্যমে কমিশন খাওয়ার বন্দোবস্ত করেনা।
আর সরকার? সেটা হতে হয় জনগণের ভোটে, কারো কাঁধে চড়ে নয়। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার কভার লোকেশনে গিয়ে তাদের টেকনিক্যাল ম্যানুয়াল, বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়া মন্ত্রীর বাড়িতে ব্যবসায়ী বেশে ঢুকে তার অপকর্মের তথ্য, হাজার মাইল দূরে বসে ওয়াকিটকিতে হাসিনা সরকারের পুলিশ বাহিনীর গোপন তথ্য ফাঁস, চাকরীরত সেনাপ্রধানের পেছনের সীটে বসে তাঁকে রেকর্ড করে নিয়ে আসা লোক আমরা, অপরাধের কেন্দ্রে গিয়ে তথ্য বের করে আনতে বদ্ধপরিকর।
তুমি বরং আপাতত ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি করো, যা যা করেছো, সেসব তো আর সিসিটিভির কভারেজের মধ্যে করোনি। সেসব যখন প্রকাশ পাবে তখন কি বলবা সেই স্ক্রীপট রেডি করো। আর আমাকে যারা তথ্য দেয় তাঁরা এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, বাটপার কিছিমের না যে ক্ষমতার আঁচ পেয়ে নিজ বাপের নামে ঠিকাদারির লাইসেন্স নেয়। আর ধরা খাইলে বলে আমি তো জানতামই না!”
এই বক্তব্যে একদিকে যেমন ব্যক্তি বিশেষের বিলাসী জীবন ও বিতর্কিত কার্যকলাপকে বিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি অন্যদিকে সাংবাদিকতার শপথ ও তথ্য সংগ্রহের পেছনের সাহসী চিত্রটিও ফুটে উঠেছে। শাসকগোষ্ঠীর গোপন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের দৃঢ় প্রত্যয় তুলে ধরার পাশাপাশি, দুর্নীতিপরায়ণদের ‘ইয়া নাফসি’ করে নিজের পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
পোস্টটি ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।