সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (PR) নিয়ে ইস্যু তৈরিকে রাজনৈতিক বিভাজনের হাতিয়ার বানানো হচ্ছে—এমন অভিযোগ তুলে বিএনপি (BNP)’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান (Dr. Abdul Moyeen Khan) বলেছেন, যারা এই ইস্যুতে দ্বন্দ্ব ছড়াচ্ছে, তারা বাংলাদেশের আদর্শে বিশ্বাস করে না।
সোমবার (৩০ জুন) রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সাধারণ সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “পিআর হতে পারে, এ নিয়ে আলোচনা চলতেই পারে। কিন্তু যদি কেউ এই পদ্ধতিকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষদের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাহলে তারা এই দেশের মৌলিক আদর্শে আঘাত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “এরা ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থে বিশ্বাসী। দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”
মঈন খান তার বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেন, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছে, রাজপথে যারা ছিলেন—তারা কখনো বিএনপি ব্যানার নিয়ে ছিল না। তারা সাধারণ ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু সেই আন্দোলনের শতকরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ছিল বিএনপির আদর্শে বিশ্বাসী।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “বাংলাদেশ কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এক সময় আওয়ামী লীগ (Awami League) ভেবেছিল এই দেশ তাদের একক পৈতৃক সম্পত্তি, কিন্তু দেশের মানুষ তা মানেনি। আবার কেউ যদি একই ভুল করে, ইতিহাস তাকে ছাড় দেবে না।”
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা অভিযোগ করেন, “আজ অনেকে বড় বড় কথা বলছে। মনে হচ্ছে বাংলাদেশে মালিকানা বদল হয়েছে। অথচ বিএনপির নেতাকর্মীরা লাখ লাখ মামলা মাথায় নিয়ে, পুলিশি নির্যাতন সহ্য করে এখনো রাজপথে রয়েছে। ৫০ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করে সরকারের প্রতিহিংসা চালানো হয়েছে।”
সভার অন্য বক্তারা পিআর পদ্ধতির পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক (Zainul Abdin Farroque) বলেন, “যেসব দল পিআর পদ্ধতির দাবি তুলছে, তারা ড. ইউনূসকে রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি (Shahid Uddin Chowdhury Annie) বলেন, “পিআর ব্যবস্থার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। এই ফাঁদে পড়ে গেলে লাভবান হবে কেবল ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী।”
বক্তারা মনে করেন, পিআর নিয়ে অপব্যাখ্যা ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তিকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি।