সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা বা PR পদ্ধতি নিয়ে চলমান আলোচনা ঘিরে একরকম দ্ব্যর্থহীন অবস্থান নিল বিএনপি (BNP)। বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে বিষয়টি উঠে আসে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
এ বৈঠকে অংশ নেয় বাংলাদেশ জন অধিকার পার্টি (Bangladesh Janodhikar Party), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (Bangladesh Jatiya Party – BJP), আমজনতার দল (Amjanatar Dal) এবং গণতান্ত্রিক বাম দল (Democratic Left Party)।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমীর খসরু বলেন, “যে কোনো মৌলিক পরিবর্তন—বিশেষ করে সংবিধানের কাঠামো বা নির্বাচনী ব্যবস্থায় পরিবর্তনের জন্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ প্রয়োজন। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির মতো এত বড় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত সংসদ ছাড়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের ৩১ দফার যে রূপরেখা আছে, সেখানে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কোনো প্রস্তাবই নেই। সুতরাং এই মুহূর্তে বিষয়টি আলোচনার পর্যায়ে নেই, বরং এটি আগামী সংসদের এখতিয়ার।”
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের অবস্থান পরিষ্কার করে খসরু বলেন, “দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ বা এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার যে প্রস্তাব, সেগুলো বিএনপির পক্ষ থেকেই এসেছে। আমরা কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, কিন্তু সব বিষয়ে না।”
তিনি স্পষ্ট করে দেন, “এটা বাকশালের মতো ‘এক দল এক মত’ ব্যবস্থা নয়। যে বিষয়গুলোতে সর্বসম্মতি হবে, সেগুলো সংস্কারের আওতায় আসবে। আর যেসব ইস্যুতে ভিন্নমত থাকবে, প্রতিটি দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনগণের রায়ের মাধ্যমে সেই সিদ্ধান্ত নেবে।”
বৈঠকে উপস্থিত দলগুলোর মধ্যে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠা এবং যুগপৎ আন্দোলনের কাঠামো দৃঢ় করতে এমন স্বচ্ছ অবস্থানকেই বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তবে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের পক্ষে থাকা অংশীদারদের প্রতি এই বার্তা স্পষ্ট যে, তা এখনই কোনো সমাধান নয়—বরং ভবিষ্যতের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হওয়াই গণতান্ত্রিক পথ।