ইসরায়েলের নির্বাচন পদ্ধতি ‘আদর্শ’ হিসেবে গ্রহণ করা কতটা যুক্তিসঙ্গত—সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, “১৭ বছর ধরে আমরা যে আন্দোলন করছি, তাতে রক্ত ঝরেছে, প্রাণ গেছে। সেই সংগ্রামের উদ্দেশ্য ছিল সরাসরি ভোটে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। অথচ এখন কেউ কেউ ইসরায়েলের পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিকে অনুসরণ করতে চাচ্ছেন। এটা সত্যিই বোধগম্য নয় যে আলেম, পীর-উলামারা এমন একটি বিদেশি পদ্ধতির পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন।”
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের নতুনবাজার এলাকায় বিএনপি (BNP) কার্যালয়ে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে ড্যাবের রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রিন্স।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ চায় সরাসরি প্রার্থী, প্রতীক এবং দল দেখে ভোট দিতে। তারা কোনো অদৃশ্য কোটার ভিত্তিতে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে চায় না। আমরা সংখ্যানুপাতিক ভোটে বিশ্বাস করি না।”
আন্দোলনের নামে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করে প্রিন্স বলেন, “কিছু ছোট রাজনৈতিক দল জুলাই চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থান নিচ্ছে, যা মূলত বিএনপিকে দুর্বল করার কৌশল। আমরা জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে অনেক ছাড় দিয়েছি, কিন্তু জনগণের স্বার্থবিরোধী কোনো ছাড় বিএনপি দেবে না।”
রাজনৈতিক মনোভাবের পরিবর্তনের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের কথা আগে ভাবতে হবে, ব্যক্তিগত পাওয়ার হিসাব করে নয়, জনগণকে কী দিয়েছি বা দিতে পারি—সেই বিবেচনায় রাজনীতি করতে হবে।” তিনি উল্লেখ করেন, এই চেতনা নিয়ে এগোলে ৭০-৮০ দশকের গণআন্দোলনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব, যা তারেক রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়া বারবার তুলে ধরেছেন।
প্রিন্স আরও বলেন, “আমরা যে সম্মিলিত আন্দোলন করেছি, তাতে ফ্যাসিবাদ হটানো সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এই বিজয়ের সুফল এখনো পুরোপুরি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছায়নি। আমরা ধীরে ধীরে এগোচ্ছি, কিন্তু দরকার দ্রুতগতির অগ্রগতি। আজ যারা ড্রাইভিং সিটে রয়েছেন—অন্তর্বর্তী সরকার কিংবা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)—তাদের ওপর দায়িত্ব পড়েছে দেশকে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড্যাবের ময়মনসিংহ জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে এম মুসা শাহীন। সঞ্চালনায় ছিলেন মহানগর ড্যাবের সদস্য সচিব ডা. সায়েম মনোয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক একেএম শফিকুল ইসলাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, যুগ্ম আহ্বায়ক একেএম মাহাবুবুল আলম, শামীম আজাদ, ড্যাব নেতা ডা. বদর উদ্দিন সেলিম প্রমুখ। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন।