কুমিল্লার মুরাদনগর (Muradnagar) উপজেলার এক নারীর উপর পাশবিক নির্যাতন ও সেই ঘটনার বিবস্ত্র ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সারাদেশে। এই ঘটনার মূল হোতা শাহ পরানকে শেষ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-১১, সিপিসি-২-এর উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার বুড়িচং এলাকা থেকে শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ধর্ষণের মামলায় ইতোমধ্যে কারাবন্দি ফজর আলীর ছোট ভাই।
র্যাব কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, “ধর্ষণের পর ভুক্তভোগী নারীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মূল পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী ছিল শাহ পরান। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক ছিল।”
এদিকে, মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শাহ পরানের সংশ্লিষ্টতা পুলিশি তদন্তে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। র্যাবের পক্ষ থেকে তাকে আটকের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে একটি বসতঘরে দরজা ভেঙে ঢুকে এক ২৫ বছর বয়সী নারীকে পাশবিকভাবে নির্যাতন করা হয়। ধর্ষণের এই ভয়াবহ ঘটনার পর নির্যাতিত নারী ও অভিযুক্তকে বিবস্ত্র করে নির্মম নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই অমানবিক ভিডিওগুলো ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ন্যায়বিচারের দাবি তোলে সাধারণ মানুষ। ঘটনার জেরে পুলিশের তদন্তে ধর্ষণে জড়িত সন্দেহে মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়, যিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা।
পাশাপাশি, ভিডিও ধারণ ও ছড়ানোর ঘটনায় পুলিশ আরও চারজন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালত ওই চার অভিযুক্তের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ও গ্রেপ্তারের খবর কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও, দেশজুড়ে শঙ্কা ও ক্ষোভ এখনো প্রশমিত হয়নি।