অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব (Shafiqul Alam) শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এক ব্যতিক্রমী মন্তব্য করে রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম মহলে আলোচনার ঝড় তোলেন। তিনি লিখেছেন, “যদি আমি সাংবাদিক হতাম, বিশেষ করে একজন ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার, তবে নির্দ্বিধায় জাতীয় নাগরিক পার্টির তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ অভিযাত্রায় অংশ নিতাম।” তার মতে, এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রচারণা নয়, বরং এটি এক নতুন ভোরের যাত্রা—যা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের গতিপথ বদলে দিতে পারে।
এই পোস্টে শফিকুল আলম বলেন, বছর খানেক আগে তরুণদের নেতৃত্বে যে গণআন্দোলনের মাধ্যমে ‘নৃশংস শাসক’-এর পতন ঘটেছিল, সেই তরুণরাই এখন দেশজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলের সমর্থন সংগ্রহে। কিছুদিন আগেও যারা ক্লান্ত ও বিতর্কিত বলে বিবেচিত হতেন, তারা এখন প্রাণচঞ্চল ও উজ্জীবিত। তার ভাষায়, এই যাত্রা যেন তাদের আন্দোলনে নতুন প্রেরণা জুগিয়েছে—তাদের আশা এখন আকাশছোঁয়া, আর লক্ষ্য নির্দিষ্ট।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (National Citizen Party – NCP) বহর শহর থেকে গ্রাম, মাঠ থেকে মোড় ঘুরে ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র, জানালেন শফিকুল। হাজার হাজার তরুণ-তরুণী এতে অংশ নিয়েছেন, স্পষ্ট হয়েছে তারুণ্যের জোয়ার। তবে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—এই তরুণ শক্তি কি আদৌ টেক্কা দিতে পারবে বিএনপি বা জামায়াতের মতো অভিজ্ঞ, সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে?
তার মতে, এনসিপির এ সফর কেবল একটি প্রচারণা নয়, বরং এটি এক গভীর রাজনৈতিক পরীক্ষা। বাংলাদেশের গণতন্ত্র কোন পথে হাঁটবে—এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে এই অভিযাত্রার মধ্য দিয়ে। বিশ্ব নজর রাখছে এই প্রজন্মের উপর। যদি তারা জনগণের আস্থা ধরে রাখতে পারে, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গণমাধ্যমের সাপোর্ট পাওয়াও সম্ভব।
শফিকুল আলম আরও বলেন, যারা মাঠপর্যায়ে সাংবাদিকতা করছেন, তাদের জন্য এটি এক অনন্য সুযোগ। এটি শুধু সংবাদ সংগ্রহ নয়—এ যেন ইতিহাস লেখার সুযোগ। রাজনৈতিক পরিবর্তনের এই সময়টি দলিল করে রাখলে তা ভবিষ্যতের সাংবাদিকতার জন্য মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। সামাজিক মাধ্যমে—যেমন ফেসবুক (Facebook) কিংবা এক্সে—নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ তুলে ধরলে রাজনীতির অন্তরালের রূপ আরও পরিষ্কার হবে।
সবশেষে তিনি লিখেছেন, “আপনার লেখাগুলো হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক ভোরের পথচলার গুরুত্বপূর্ণ দলিল। সামনে এগিয়ে আসুন—লিখুন, আর এ রূপান্তরকালের একজন প্রত্যক্ষ অংশীদার হয়ে উঠুন।”