বোরকার নিচে পুলিশের ইউনিফর্ম পরে নিজেকে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পরিচয় দিচ্ছিলেন তানিয়া আক্তার নামের ২৬ বছরের এক তরুণী। গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি নিজেই উপস্থিত হয়ে পুলিশের সদস্যদের সামনে ‘এসআই তানিয়া’ হিসেবে পরিচয় দেন। কিন্তু একটি সাধারণ ভুলেই ফাঁস হয়ে যায় তার অভিনয়। দায়িত্বরত এক কনস্টেবলকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করায় সন্দেহ দানা বাঁধে। পুলিশ তৎক্ষণাৎ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার ভুয়া পরিচয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তৌফিক আহমেদ) জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোরকা পরা এক নারী থানায় এসে নিজেকে এসআই দাবি করেন। কিন্তু কথা বলার ধরন ও আচরণে কিছুটা অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে। বিশেষ করে থানার কনস্টেবলকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করায় পুলিশ সদস্যরা সতর্ক হন। তার বোরকার নিচে ইউনিফর্ম পরা থাকলেও, যাচাইয়ে দেখা যায় তিনি পুলিশ সদস্য নন।
পরবর্তীতে এসআই শাহীন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার আদালতে হাজির করে পুলিশ তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। তবে রিমান্ড শুনানি এখনো হয়নি বলে জানান ওসি।
পুলিশ আরও জানায়, আটক নারী তানিয়া আক্তার গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজারী (মধ্যপাড়া) এলাকার বাসিন্দা আবু তালেবের মেয়ে। তল্লাশিতে তার কাছ থেকে একটি পুলিশ ইউনিফর্ম উদ্ধার করা হয়েছে। তানিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও পুলিশের পোশাক ও সরঞ্জাম পাওয়া গেছে—যা সাধারণত জিএমপির (গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ) সদস্যরা ব্যবহার করেন।
এই সরঞ্জামগুলো কোথা থেকে এসেছে, বা তানিয়ার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। একজন নারী কীভাবে পুলিশের ছদ্মবেশে এতদূর আসতে পারলেন—তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরছে সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।