খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভাইরাল হওয়া যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুধু গুলিতেই ক্ষান্ত হয়নি হত্যাকারীরা—মাহবুবের মৃত্যু নিশ্চিত করতে কুপিয়ে তার পায়ের রগও কেটে ফেলা হয়। শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে খুলনার দৌলতপুরে নিজ বাড়ির সামনে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মাহবুব নিজের প্রাইভেটকার পরিষ্কার করছিলেন বাড়ির সামনে। এমন সময় মোটরসাইকেলে করে তিনজন দুর্বৃত্ত এসে তার গাড়ির সামনে দাঁড়ায় এবং লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিতে লুটিয়ে পড়ার পর হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার পায়ের রগ কেটে দেয়, যাতে নিশ্চিতভাবে মৃত্যু ঘটে।
এলাকাবাসীরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, হামলাকারীদের মধ্যে একজন হেলমেট পরিহিত ছিলেন, তবে অন্য দুজনের মাথায় কোনো হেলমেট ছিল না। স্থানীয়রা দ্রুত গুরুতর আহত অবস্থায় মাহবুবকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দৌলতপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মাহবুব মোল্লা দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কী কারণ রয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয়দের মতে, ৫ আগস্ট পর থেকে এলাকায় আগ্রাসী আচরণ করছিলেন মাহবুব। সম্প্রতি মাদক বিক্রিকে কেন্দ্র করে এলাকার আরেকটি গ্রুপের সঙ্গে তার তীব্র বিরোধ শুরু হয়। পূর্বে এ নিয়ে একাধিকবার হামলার শিকার হন তিনি।
নিহত মাহবুবুর রহমান খুলনার দৌলতপুরের পশ্চিম মহেশ্বরপাশা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুবদল (Jubo Dal)-এর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের সময় তাকে ধারালো অস্ত্র হাতে দেখা যাওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে যুবদল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কারের পর থেকে তিনি আর কোনো সাংগঠনিক দায়িত্বে ছিলেন না।
নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং হত্যাকারীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।