“সন্ত্রাসীদের কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না?”—সরকারকে সরাসরি প্রশ্ন তারেক রহমানের

মিটফোর্ডের ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। পুরান ঢাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটে যাওয়া এ হত্যার ঘটনায় যারা ‘মব’ বা জনতা-রূপে আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এখনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি সরকারের উদ্দেশে কঠিন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।

শনিবার (১২ জুলাই) গুলশানে ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময়’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “দেশে যে ধারাবাহিকভাবে হত্যা-নৈরাজ্য বাড়ছে, সেটি সরকারের প্রশ্রয় ছাড়া সম্ভব নয়। আমরা খুব আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি—যে হত্যাকারীদের স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে, তারা এখনো ধরা পড়েনি।”

উক্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

তারেক রহমান বলেন, “যারা মব তৈরি করছে, তারা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না? সরকার কি তবে প্রচ্ছন্নভাবে এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে? প্রশাসনের কোনো অংশও কি এতে যুক্ত?” এসব প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এই ঘটনার পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে, যদি প্রশাসন অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেয়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে সেই অদৃশ্য শক্তি, যারা স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারকে পদদলিত করছে। আমরা বারবার বলে এসেছি—বিএনপি কোনো হত্যাকারীকে প্রশ্রয় দেবে না। আইনানুগ বিচার চাই—যেই করুক, যে পরিচয়ই থাকুক না কেন।”

তারেক রহমান প্রশ্ন তোলেন, “সরকার ব্যর্থ কেন? কেন তারা এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? হত্যা যদি প্রকাশ্যে হয়, আর রাষ্ট্র চোখ বন্ধ করে রাখে, তবে তা রাষ্ট্রের ব্যর্থতাই নয়, একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রশ্রয়ও হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রশাসনের ভেতর এখনো স্বৈরাচারের ভূত লুকিয়ে আছে। এ ভূত দূর না করলে নতুন ভূতের জন্ম চলতেই থাকবে। এ কারণেই আমাদের এখনই সচেতন হওয়া দরকার।”

সভায় তারেক রহমান আশ্বাস দিয়ে বলেন, “আগামী দিনে রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে—মানুষের অধিকার রক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের সঠিক বিচার হবে। বিএনপি তার সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেবে। আর এই মুহূর্তে সকল হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ ও দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।”

তারেক রহমানের এই বক্তব্যে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা ও প্রশাসনিক জবাবদিহিতার দাবি। একইসঙ্গে এটি একটি রাজনৈতিক সতর্কবার্তা—রাষ্ট্র যদি অপরাধীদের আশ্রয় দেয়, তবে আগামীতে এর দায়-দায়িত্বও রাজনীতির মঞ্চে বড় প্রশ্ন হয়ে উঠবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *