বিএনপি (BNP) নেতাকে ফুলের মালা পরানোর ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়া শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। বুধবার (১৬ জুলাই) তাকে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম উদ্দিন মোল্যা।
ঘটনার সূত্রপাত একটি ভাইরাল ছবিকে ঘিরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ছবিতে দেখা যায়, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মাসুদুর রহমান-এর গলায় নিজ হাতে ফুলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা সুরুজ উদ্দিন। পুলিশের পোশাকে থাকা একজন কর্মকর্তার এমন কাজকে অনেকে ‘অপেশাদার আচরণ’ হিসেবে আখ্যা দেন। ফলস্বরূপ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এটি ছিল না তার প্রথম বিতর্ক। এর আগেও, ২০২৩ সালের ১৫ জুন পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় দায়িত্ব পালনকালে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নির্যাতনের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সুরুজ উদ্দিন সাময়িক বরখাস্ত হন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে চারজন আসামিকেও নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ ওঠে। যদিও পরবর্তীতে সেই বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘সুরুজ উদ্দিনকে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে আমরা আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। এরপরই তিনি গোপালগঞ্জে চলে যান।’
মালা পরানো একটি সাধারণ বিষয় বলে অনেকের কাছে মনে হলেও, এটি যখন রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ঘটে এবং একজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তার হাত থেকে আসে, তখন সেটি প্রশ্নের মুখে পড়ে তার নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিয়ে। ফলে, একদিকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসন নিজেদের দায়মুক্ত করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে, এ ঘটনা আবারও আলোচনায় নিয়ে এলো পুলিশ সদস্যদের রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের প্রশ্ন।