“জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল”: শহীদ মুগ্ধর বাবা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিল, কিন্তু তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম তা ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে হারিয়ে ফেলেছি। যে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল দিয়ে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল, সে কখনও জাতির পিতা হতে পারে না। তার কন্যা শেখ হাসিনাও হয়ে উঠেছিল স্বৈরাচারতন্ত্রের দানবকন্যা।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে ঢাকার দিয়াবাড়িতে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এডাস্ট) অডিটোরিয়ামে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে মুগ্ধর শহীদ দিবসে ‘জুলাই স্মৃতিতে অমলিন আমরা’ শীর্ষক স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এডাস্ট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।

অনুষ্ঠানে এডাস্ট বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহীদ মুগ্ধর নামে একটি পানি (মিনারেল ওয়াটার) কারখানা স্থাপন করে উৎপাদিত পানি বিনামূল্যে বিতরণের ঘোষণা দেন।

তিনি দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে সকল জায়গাতেই কাজ করতে হবে। ওয়ান ইলেভেনে এক সংস্কারের কথা বলে যারা দেশকে দিল্লির পায়ে পিষ্ঠ করে দিয়েছে, সেই ফ্যাসিবাদীদের হাত থেকে জুলাইকে মুক্তি দিন। জুলাইকে জুলাই যোদ্ধাদের হাতে ফেরত দিন।’

শহীদ মুগ্ধর স্মৃতিচারণ করে শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘মুগ্ধ আন্দোলনে সারা বাংলাদেশে অক্সিজেন জুগিয়েছে। জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচারের দাসত্ব থেকে দেশকে, ১৮ কোটি মানুষকে মুক্তি দিয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমাতে সরকারের নির্দেশে পেটোয়া বাহিনী হয়ে নির্বিচারে পুলিশ, আর্মির গুলিবর্ষণ থেকে মানুষকে মুগ্ধরা মুক্তি দিয়েছে।’

আওয়ামী লীগ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে উল্লেখ করে এডাস্ট চেয়ারম্যান বলেন, ‘দলটির হাতে ৫০টিরও বেশি জেলায় জুলাই যোদ্ধা শিক্ষার্থী খুন হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আইসিটির দুটি কোর্টের মাধ্যমে বিচার সম্ভব নয়।’ ঢাকায় অন্তত ১০টিসহ দেশের ৬৪ জেলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধাদের খুনি ও সহযোগীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটি করা হলে গোপালগঞ্জের ঘটনা হয়তো ঘটতো না।’ এ নিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের প্রশ্ন তোলার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও এডাস্ট এসডিআই পরিচালক ড. আ. ন. ম. এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘গোপালগঞ্জের ঘটনা প্রমাণ করে যে, দেশ থেকে এখনও ফ্যাসিবাদ শেষ হয়নি। ফ্যাসিবাদ রুখতে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।’

জুলাই বার্ষিকী উপলক্ষে এডাস্ট আয়োজিত দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদদের স্মৃতিচারণ করেন বক্তারা। এছাড়া স্থিরচিত্র ও ভিডিও প্রদর্শনী, মোমবাতি প্রজ্বলন, গ্রাফিতি অঙ্কন করে এডাস্ট শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এডাস্ট বিওটি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সিরাজুল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান লিটু, সদস্য কামরুন নেহার, চীফ একাডেমিক এডভাইজর অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. শহীদুল ইসলাম, গ্লোবাল বাংলাদেশ এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস’র যুগ্ম আহ্বায়ক গবেষক ও শিক্ষক একেএম জাকির হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও জুলাই বাষির্কী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শারমিন আকতার, রোবোটিক্স এন্ড অটোমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মাজিদ ইসতিয়াক আহমেদ, জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের কো-অর্ডিনেটর ও জুলাই বাষির্কী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মো. জুবায়ের আহমেদ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনব) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুব হাসান আকন্দ, শিক্ষার্থী আব্দুল হালিম ও মারজান আহমেদ উচ্ছ্বাস। এসময় বিভিন্ন অনুষদের এডভাইজর, রেজিস্ট্রার, চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *