আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে কোটা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানালেও, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (Kader Siddique) স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন—যদি এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কেউ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman), মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে তিনি পিছপা হবেন না।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের সোনার বাংলা কমিউনিটি সেন্টারে ‘কাদেরিয়া বাহিনীর’ মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, “তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে, তারা যদি স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে, মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করে, তাহলে যেমন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি, তাদের বিরুদ্ধেও দাঁড়াবো—একটুও ভাববো না।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতির স্বর প্রকাশ করে তিনি বলেন, “নিরপেক্ষভাবে বললে, যারা এই আন্দোলন করেছে তারা আল্লাহর নির্ধারিত পথেই চলেছে। কোনো সরকার যখন অন্যায় করে, তখন আল্লাহর তরফ থেকেই তার পতন আসে। কেবল কোটা বা বৈষম্যের কারণে নয়, শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নানা অন্যায়ের কারণেই মানুষ রাস্তায় নেমেছে। তাই এই বিজয় শুধু আন্দোলনকারীদের নয়, এটি এসেছে পুরো জাতির ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে।”
এসময় কাদের সিদ্দিকী দাবি করেন, আন্দোলনের কৃতিত্ব কেউ এককভাবে নিতে পারে না। তিনি বলেন, “শুনেছি বিএনপির প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ জন মারা গেছে। আমি ২৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। তাই কেউ যদি এখন বিএনপি বা অন্য কাউকে বাদ দিয়ে একক কৃতিত্ব নিতে চায়, সেটা ঠিক হবে না। এই হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের কৃতিত্ব জনগণের—কারও একার না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধারা, যাদের মধ্যে ছিলেন বীর বিক্রম আবুল কালাম আজাদ, বীরপ্রতীক হাবিবুর রহমান তালুকদার, বীরপ্রতীক ফজলুল হক, বীরপ্রতীক আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা। সভাটিতে পুরনো যুদ্ধস্মৃতি, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়।