গত ২৯ জুলাই ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে ৩০ থেকে ৩৫ জনের একটি দল মতিঝিলের ‘বাংলার বানী ভবন’ দখলের চেষ্টা করেন। ভবন কর্তৃপক্ষ পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে মতিঝিল থানা পুলিশ গেলে ক্ষিপ্ত হন ‘সমন্বয়কর’। কেন সেখানে পুলিশ পাঠানো হলো সে কৈফিয়ত চাইতে পরদিন ৩০ জুলাই থানায় যান ‘সমন্বয়করা’। তারা মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর হামলার চেষ্টা করলে তিনজনকে আটক করা হয়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়।
ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, মতিঝিল বাণিজ্যিক ওই ভবনে কয়েকটি ব্যাংকের অফিস রয়েছে। একটা পত্রিকা অফিসও রয়েছে। ভবন কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশ কেন সেখানে গিয়েছে সে কৈফিয়ত চাইতে থানায় আসেন ‘সমন্বয়করা’। তারা পুলিশকে ভয়ভীতি দেখান এবং হৈ-হুল্লোড় সৃষ্টি করেন। পরে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে তিনজনকে আটক করে এবং তারাসহ অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করা হয়।
এদিকে, মতিঝিল থানায় হামলা ও সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল এই আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমান। তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মতিঝিল থানার এসআই আবু সালেহ শাহীন। কারাগারে পাঠানো তিনজন হলেন- মহসীন রেজা, রিমন খান ও রায়হান খান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুলাই রাতে আসামিরা বেআইনি একতাবদ্ধ হয়ে থানায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় ডিউটিরত পুলিশ সদস্য বাধা দিলে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তারা থানার ভেতরে ঢুকে পড়েন। পরে তারা ওসির খোঁজ করতে করতে ওসির (তদন্ত) কক্ষে প্রবেশ করেন এবং ওসিকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলেন, আপনি কোন সাহসে বাংলার বাণী অফিসে পুলিশ পাঠালেন। এ সময় টেবিল চাপড়িয়ে কৈফিয়ত দাবি করতে থাকেন তারা। এতে সেবা নিতে আসা সাধারণ নাগরিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তিনজনকে আটক করে। বাকিরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় আটক তিনজনসহ আরও ৩০ থেকে ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আসামিরা আগেও গুলশানে বাড়ি দখলের চেষ্টা চালিয়েছিল, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এ ঘটনার জের ধরেই তারা মতিঝিল থানায় এসে হামলা চালান বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও তাদের সহযোগীদের নাম-পরিচয় গোপন করছে। তদন্ত চলাকালীন জামিনে মুক্তি পেলে আসামিরা পলাতক হতে পারেন এবং তদন্তে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।