রাজধানীর শাহবাগে আগামীকাল রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (Jatiyatabadi Chhatra Dal) আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশ। ‘জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে’ এই আয়োজন ঘিরে ইতোমধ্যে উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক শঙ্কা বাড়ছে।
প্রথমে জাতীয় শহীদ মিনারকে সমাবেশস্থল হিসেবে নির্ধারণ করা হলেও পরে স্থানান্তর করে শাহবাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সমাবেশের আগেই গত দুই দিন ধরে শাহবাগে অবস্থান করছিল ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’ নামের একটি গ্রুপ, যাদের শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব শুক্রবার বিকেলে বলেন, “সেখানে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার দায়িত্ব সরকারের ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। আমরা শুধু আমাদের মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু করব। সন্ধ্যার মধ্যেই তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে—এই প্রত্যাশা ছিল।”
তিনি আরও জানান, ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’-এর সদস্য সংখ্যা ছিল খুবই কম। “সরকার চাইলে সহজেই সরাতে পারত,”—বলে মন্তব্য করেন রাকিব।
এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল থেকে তাদের নেতাকর্মীদের জন্য ছয় দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে:
১. কোনো ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসা যাবে না।
২. প্রতিটি ইউনিটকে নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করতে হবে।
৩. অ্যাম্বুল্যান্সসহ জরুরি যান চলাচলে সহযোগিতা করতে হবে।
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ইউনিটের গাড়ি প্রবেশ করানো যাবে না।
৫. ব্যক্তিগত শোডাউন বা মিছিল নিষিদ্ধ।
৬. সমাবেশ শেষে নির্ধারিত স্থান পরিষ্কার করে চলে যেতে হবে।
এই নির্দেশনাগুলো ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
এদিকে শাহবাগে একই দিনে আরেকটি রাজনৈতিক সংগঠন এনসিপি (NCP) এর কর্মসূচি রয়েছে। গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এই দুটি কর্মসূচি ঘিরে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার উসকানি বা নাশকতা ঘটানোর চেষ্টা হতে পারে।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা শাহবাগে রাজনৈতিক কর্মসূচির এই সংঘর্ষ সম্ভাবনা রাজধানীজুড়ে নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা ও সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে।