জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগামী ৫ কিংবা ৮ আগস্টের একটিকে বেছে নিয়ে নির্বাচনকাল ঘোষণা করতে পারেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)। রাজনৈতিক ও প্রতীকী তাৎপর্যের দিক থেকে এই দুই তারিখেই রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যঞ্জনা—একটি ৫ আগস্ট, যেদিন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ক্ষমতা হারান; অপরটি ৮ আগস্ট, যেদিন ড. ইউনূস দায়িত্ব নেন প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে।
সূত্র বলছে, এই দুটি দিনের মধ্যে ৫ আগস্টকেই এগিয়ে রাখছেন ড. ইউনূস। কারণ তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের দিনটিকে নয়, বরং রাজনৈতিক পালাবদলের প্রতীকী দিনটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফলে ঐদিনই জাতির উদ্দেশে দেওয়া একটি টেলিভিশন ভাষণের মাধ্যমে নির্বাচনকাল ঘোষণা করতে পারেন তিনি।
সরকারের পক্ষ থেকেও ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ জনসমক্ষে উপস্থাপনের ঘোষণা এসেছে। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সেদিনই যদি নির্বাচনের সময় জানানো হয়, তবে তার পরপরই প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার অনুরোধ জানাবেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচনকাল নির্ধারণে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission) ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। যদিও এসব আলোচনায় কোনো নির্দিষ্ট তারিখ সামনে আনেনি কমিশন, তবে বিষয়টি যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তা স্পষ্ট।
এর আগে গত ২৬ জুলাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটি বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, ‘খুব শিগগিরই’ নির্বাচনকাল ঘোষণা করা হবে। গত ৯ জুলাই তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে নির্দেশনা দেন, যেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। ঐ বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলের মধ্যেই হতে পারে।
আবার ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর সঙ্গে একটি আলোচিত বৈঠকে ড. ইউনূস মন্তব্য করেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের রমজানের আগেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। অর্থাৎ, বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
সার্বিকভাবে বলা যায়, ড. ইউনূসের ভাষণের দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা জাতি। ৫ আগস্ট বিকেল নাগাদ যদি নির্বাচনকাল ঘোষিত হয়, তবে দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।