রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান ঘিরে তোলপাড়, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে উত্তপ্ত বিএনপি

কক্সবাজারের ইনানী সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) হঠাৎ করেই উপস্থিত হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র পাঁচ শীর্ষ নেতা। আর তাদের এ সফর ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। বিএনপির অভিযোগ—এই রিসোর্টে বসেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলছে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, যার ইঙ্গিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে, যখন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা রয়েল টিউলিপের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করে বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বরং তা চলছে পর্যটনের মুখোশের আড়ালে। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী, যিনি সরাসরিই অভিযোগ তোলেন, “যারা ভোটে জিততে পারে না, তারাই আজ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিচ্ছে।”

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এনসিপির পাঁচ নেতা—হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। পরে তারা ইনানীর ওই রিসোর্টে ওঠেন, যেখানে তারা ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্য, এই সফর নিয়ে কোনো আগাম বার্তা ছিল না। এমনকি এনসিপি নেতাদের হোটেল বুকিংও ছিল না আগেভাগে।

উল্লেখ্য, রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে—এই পাঁচ নেতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক করতে এসেছেন। যদিও এ অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফদ্দিন শাহীন বলেন, “হোটেলটিতে পিটার হাস নেই। এখানে যেসব বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”

একই বক্তব্য দিয়েছেন এনসিপি নেতারাও। খালেদ সাইফুল্লাহ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমরা এখানে ঘুরতে এসেছি, কোনো বৈঠক করিনি বা কারো সঙ্গে দেখা হয়নি।” মুখ্য সংগঠক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারিও বিবিসি বাংলাকে জানান, “আমরা পদযাত্রায় ক্লান্ত ছিলাম, হুট করেই সাগর দেখতে চলে এসেছি।”

এদিকে, রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তিনি হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী ও দুই নারী যাত্রীকে নিয়ে এসেছেন। যাদের একজন সার্জিস আলমের স্ত্রী এবং অন্যজন তাসমিন জারা।

বিষয়টি নিছক ঘোরাঘুরি, না কি আসলেই কোনো গোপন রাজনৈতিক কর্মযজ্ঞ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে এনসিপির কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *