জয়পুরহাটে জামায়াতের মিছিলে ‘ভুলে’ খালেদা জিয়ার ফাঁসির স্লোগান, রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড়

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জয়পুরহাটে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত গণমিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে গিয়ে ভুলক্রমে উচ্চারিত হয়েছে বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia)–এর নাম। এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই রাজনৈতিক মহলে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও ক্ষোভের ঝড়।

বুধবার (৬ আগস্ট) জয়পুরহাটে অনুষ্ঠিত এই মিছিলে ঘটনার সময় জনাকীর্ণ পরিবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের স্লোগান দেওয়ার মুহূর্তে এক নেতা শেখ হাসিনার পরিবর্তে বেগম খালেদা জিয়ার ফাঁসির দাবি করে বসেন। যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে।

এই ‘ভুল’ রাজনৈতিক সমীকরণে নাড়া দেয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের। জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রথমে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানান শফিকুল ইসলাম (Shafiqul Islam), যিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি।

তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেন, “জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের যে গণমিছিল হয়েছে, সেখানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়েছে, এটা ভালো কথা। আমরাও দিয়েছি। কিন্তু দেশের সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ফাঁসি চাওয়া কোন যুক্তিতে? এটা কি প্রতিহিংসা, নাকি রাজপথে উত্তেজনা সৃষ্টির কৌশল? নাকি নিছক ভুল? যদি ব্যাখ্যা দিতেন, আমরা উপকৃত হতাম।”

বিএনপি নেতাদের এমন প্রতিক্রিয়ার পরপরই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হয়। দলটির প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি এবং জয়পুরহাট সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হাসিবুল আলম (Hasibul Alam) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, “স্লোগানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসির দাবি ছিল। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেগম খালেদা জিয়ার নাম উঠে এসেছে, যা ভুলবশত হয়েছে। আমরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”

ঘটনাটি নিয়ে কথা বলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন (Golzar Hossain)। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “ঘটনাটি জানার পর আমরা জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং মেনে নিয়েছেন যে বেগম খালেদা জিয়া একজন আপসহীন নেত্রী।”

রাজনৈতিক মাঠে যেকোনো বক্তব্য কিংবা স্লোগানের তাৎপর্য যে কতটা গভীর এবং স্পর্শকাতর হতে পারে, জয়পুরহাটের এই ঘটনাই যেন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। যদিও জামায়াত ভুল স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশ করেছে, কিন্তু আলোচনা এবং সমালোচনার তরঙ্গ থেমে থাকেনি এখনো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *