‘বিএনপির ভরসায়’ রাজনীতি ছাড়ছে এনসিপির তরুণরা, বললেন ড. মনজুর

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ভেঙে পড়ার পেছনে নেতাদের হতাশাকেই দায়ী করেছেন ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী (Dr. Manzoor Ahmed Chowdhury)। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্র ঘিরে অনেক সম্ভাবনা থাকলেও, তা এখন প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তার মতে, এই ভাঙনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন ড. ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus), যিনি বর্তমানে বিএনপির ওপর ভর করে নিজের রাজনৈতিক ভূমিকা সাজাতে চাইছেন।

বৃহস্পতিবার, রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল (Masud Kamal)-এর সঞ্চালনায় আয়োজিত এক আলোচনায় এসব মন্তব্য করেন নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান।

ড. মনজুর বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে দেশ-বিদেশে বহু আশা তৈরি হয়েছিল। ছাত্রনেতারা ছিলেন এর প্রাণভোমরা। কিন্তু রহস্যজনকভাবে তারা ঘোষণাপত্রের অনুষ্ঠানে না গিয়ে কক্সবাজারে চলে গেলেন। আমার মনে হয়েছে, তারা আগে থেকেই কোনো নিরুৎসাহজনক বার্তা পেয়ে গিয়েছিলেন।”

তিনি জানান, ওই ঘটনার পর এনসিপি পাঁচজন নেতাকে শোকজ করেছে, যাদের মধ্যে রয়েছেন দলের প্রধান চারজন। “অর্ধেক দলই যেন একসঙ্গে অনুষ্ঠান বর্জন করে কক্সবাজারে চলে গেছে,”— মন্তব্য করেন তিনি।

আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করে ড. মনজুর বলেন, ঘোষণার ঠিক আগের দিন, এনসিপির আরেক নেত্রী সামান্তা শারমীন প্রকাশ্যে ড. ইউনূসকে স্বার্থপর বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তার ভাষ্য, “ড. ইউনূস নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই ভাবেন না।”

ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে ড. মনজুর বলেন, “তিনি নির্বাচনকেন্দ্রিক অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপিকে ক্ষমতায় বসিয়ে তিনি হয়তো দেশ ছাড়বেন, না হয় প্রেসিডেন্ট হবেন— এমন পরিকল্পনাই তিনি করছেন বলে মনে হয়।”

এনসিপির তরুণ নেতাদের হতাশার কারণ ব্যাখ্যা করে ড. মনজুর বলেন, “তারা দীর্ঘ সময় ধরে অনেক ঝুঁকি নিয়েছে। সেই রাজনৈতিক জোয়ার ধসে যাওয়ায় এখন তারা ভিসার চেষ্টা করছেন বলে মনে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র হতে পারে তাদের প্রথম পছন্দ। এমনকি পিটার হাস হয়তো তাদের সহায়তা করতে পারেন। তবে আমি বলছি না— তাদের সঙ্গে পিটার হাসের কোনো বৈঠক হয়েছে।”

বক্তব্যের ভেতর চাপা ক্ষোভ এবং পরোক্ষ আক্ষেপ প্রকাশ করে ড. মনজুর বলেন, ড. ইউনূস একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের সুযোগকেই নষ্ট করে দিয়েছেন। এনসিপির এই পতন প্রমাণ করে— ব্যক্তিগত এজেন্ডা নিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক আন্দোলনে ঢোকা কতটা ক্ষতিকর হতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *