সাবেক সিইসি রকিবউদ্দীনসহ ১২ সাবেক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তার দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ (Kazi Rakibuddin Ahmad) এবং আরও ১১ সাবেক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। বিএনপির দায়ের করা এক মামলায় অভিযুক্ত এসব ব্যক্তিরা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিদের বিদেশ গমনা বন্ধ করা জরুরি। সে অনুযায়ী ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা অন্যান্য ব্যক্তিরা হলেন: নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান; সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ (Helaluddin Ahmed) এবং মোহাম্মদ সাদিক।

এরা সবাই বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানে মামলা সংশ্লিষ্টতায় পলাতক রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার পেছনের প্রেক্ষাপট

গত ২২ জুন শেরে বাংলা নগর থানায় বিএনপি একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নির্বাচন কমিশনের সংবিধানিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালিত হয়নি। বরং ভয়-ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে একতরফাভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে।

এই মামলায় তিনজন সাবেক সিইসি—কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, এ কে এম নূরুল হুদা (AKM Nurul Huda) ও কাজী হাবিবুল আউয়াল (Kazi Habibul Awal)—কে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিস্তৃতি এতটাই ব্যাপক যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina), পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী পাঁচ জন—হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে।

জানা গেছে, এ কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে কাজী রকিবউদ্দীনসহ বাকি ১২ জন পলাতক রয়েছেন এবং আদালতের আদেশে এখন তারা দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগও হারালেন।

এই মামলার মধ্য দিয়ে আবারও রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে বিতর্ক ও উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *