‘হাসপাতালে ভর্তির সময় তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়েছে’: নীলা

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সাবেক নেত্রী নীলা ইস্রাফিল (Neela Israfil) অভিযোগ করেছেন, তিনি অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় তার অনুমতি ছাড়াই ভর্তি ফর্মে স্বামীর নামের স্থানে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার (Sarwar Tushar)-এর নাম বসানো হয়েছে। বিষয়টিকে তিনি প্রকাশ্যে জালিয়াতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে দাবি করেছেন।

শনিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে ভর্তি ফর্মের একটি কপি যুক্ত করে নীলা লিখেছেন—
“আমি নীলা ইস্রাফিল। সেদিন আমি সম্পূর্ণ অজ্ঞান অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। নিজের নাম, পরিচয় কিংবা জীবনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তখন আমার ছিল না। সেই সুযোগে সারোয়ার তুষার আমার স্বামীর নামের জায়গায় নিজের নাম বসিয়ে দিয়েছে। এটি কোনো ‘ভুল’ নয়, এটি আইনগতভাবে জালিয়াতি।”

তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে—প্রমাণ হিসেবে ব্যবহারযোগ্য নথি মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি করা এবং তা ব্যবহার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একইভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনেও অনুমতি ছাড়া কারও ব্যক্তিগত তথ্য পরিবর্তন করা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।

নীলার ভাষায়, তার পারিবারিক পরিচয় বিকৃত করা মানে শুধু সামাজিক সম্মানহানি নয়, বরং ব্যক্তিগত মর্যাদা ও মানবাধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ (UDHR)-এর ধারা ৩, ৫, ১২ ও ২২ অনুযায়ী তার গোপনীয়তা, মর্যাদা এবং আইনি নিরাপত্তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, হাসপাতালের নথিতে থাকা এই ভুয়া তথ্য ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে এবং সামাজিক ও আইনগত নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে নীলা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,
“অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত করা হোক, দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং আমার প্রকৃত তথ্য পুনঃস্থাপন করা হোক। রোগীর অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে যারা এমন অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এটা শুধু আমার লড়াই নয়, বরং প্রতিটি মানুষের নিজের পরিচয়, মর্যাদা ও অধিকারের জন্য লড়াই।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *