দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঠেকাতে বিভিন্ন মহলে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে : তারেক রহমান

দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঠেকাতে বিভিন্ন মহলে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। তিনি দাবি করেন, বিএনপি দেশকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, কিন্তু এই পরিকল্পনা ভণ্ডুল করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোতে ফেরার পথও নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার বিকেলে নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে যুক্ত হয়ে ভার্চুয়াল প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ১৫ বছর পর নওগাঁ শহরের বালুডাঙ্গা এলাকায় নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক উপস্থিতি জানান।

তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর গণঅভ্যুত্থানের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে, এখন শুরু হয়েছে দ্বিতীয় পর্ব—জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এই পর্বের প্রথম ধাপ হচ্ছে নির্বাচন, যা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই নির্বাচন ঠেকাতে নানারকম ষড়যন্ত্র চলছে বলে তিনি দাবি করেন। তারেক রহমান দুইটি বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন—প্রথমত, বর্তমানে বিএনপির ‘সুসময়’ চলায় অনেক ‘ঘুঘু’ কাছে ভিড়তে পারে, তাই তাদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, দলীয় ঐক্য বজায় রেখে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলেও বিএনপিকে বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দেশে বেকারত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে—এসব খাত পুনর্গঠনের জন্যই বিএনপি পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। কিন্তু এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন রোধে সক্রিয় রয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, দেশের মানুষ এখন বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। তারা বিশ্বাস করে, একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলই দেশকে ধীরে ধীরে পুনর্গঠন করতে সক্ষম। এজন্য জনগণের আস্থা অর্জন করাই হবে বিএনপির প্রধান কাজ। আস্থা অর্জন করে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠনে হাত দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক এসএম রেজাউল ইসলাম (SM Rezaul Islam)। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ (Iqbal Hasan Mahmud)। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম (Abdus Salam), বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লে. কর্নেল (অব.) আব্দুল লতিফ খান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর রহমান খান আলীম এবং ওবায়দুর রহমান চন্দন।

দ্বিতীয় অধিবেশনে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন শুরু হয়। জেলার ১১টি উপজেলা ও তিনটি পৌর কমিটির ১ হাজার ৪১৪ জন কাউন্সিলরের ভোটে নতুন নেতৃত্ব গঠিত হবে। শীর্ষ তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ২০ জন প্রার্থী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *