রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রাথমিক যাচাই–বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে অন্তত ২২টি দল। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party – NCP), আমজনতার দল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মতো রাজনৈতিক দল । আবার এই তালিকাতে রয়েছে বাংলাদেশ বেকার সমাজ (Babes), মৌলিক বাংলা (Moulik Bangla) ও বাংলাদেশ সলুশন পার্টি (Bangladesh Solution Party) র মতো নামসরস্ব কিছু দলও। । ইসি সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত এই দলগুলোর কার্যক্রম মাঠপর্যায়ে তদন্তে পাঠানো হবে। তদন্ত শেষে চূড়ান্তভাবে কোন দলগুলো নিবন্ধন পাবে, তা নির্ধারণ করবে কমিশন।
আজ সোমবার ইসির অভ্যন্তরীণ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এর আগে রোববার মাঠপর্যায়ের যাচাইয়ের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে ১৬ দলের তালিকা তৈরি করেছিল কমিশন। একদিনের অতিরিক্ত যাচাই শেষে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২।
গত ২২ জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য আবেদন গ্রহণ করে ইসি। প্রথম দফায় কোনো দলই শর্ত পূরণে সক্ষম হয়নি। পরে সব দলকে ১৫ দিনের অতিরিক্ত সময় দিয়ে ঘাটতি পূরণের সুযোগ দেওয়া হয়। ৩ আগস্ট শেষ সময়ের মধ্যে ৮৪টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত পূরণের তথ্য জমা দেয়। যাচাই শেষে এর মধ্যে ২২টি দল প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ হয়।
প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণ ২২ দলের তালিকা হলো— ফরওয়ার্ড পার্টি, আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জাতীয় জনতা পার্টি, জনতার দল, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)–সিপিবি (এম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ–শাহজাহান সিরাজ), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ সলুশন পার্টি এবং নতুন বাংলাদেশ পার্টি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ১৪৩ দলের মধ্যে ৮৪টি তথ্যঘাটতি পূরণ করেছে, কিন্তু ৫৯টি দল কোনো সাড়া দেয়নি। যাচাই–বাছাই শেষে ২২টি দলের তথ্য প্রাথমিকভাবে সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় এগুলো মাঠপর্যায়ে যাচাইয়ে পাঠানো হবে। অন্যদিকে ১২১টি দল অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে।
আইন অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন পেতে হলে কেন্দ্রীয় কমিটি, দেশের এক–তৃতীয়াংশ জেলা ও অন্তত ১০০ উপজেলা কমিটি থাকতে হবে। প্রতিটি কমিটিতে থাকতে হবে ন্যূনতম ২০০ ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ। এছাড়া দলের প্রার্থী যদি অতীতে সংসদ সদস্য হয়ে থাকে বা গত নির্বাচনে পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকে, তবে সেটিও নিবন্ধনের যোগ্যতা হিসেবে গণ্য হয়। সব শর্ত পূরণ না হলে দলটির পক্ষে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকে না।
২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে এই নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫১, যদিও এর মধ্যে কিছু দলের কার্যক্রম আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।