রাজশাহীর বাটার মোড়ে এক গণসমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur) বলেন, ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলেও গত এক বছরে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। তার মতে, দেশে এখনো পুরনো ফ্যাসিবাদী রাজনীতি চালু রয়েছে এবং ফ্যাসিবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এই গণঅভ্যুত্থানের বীজ রোপিত হয়েছিল ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনের মাধ্যমে। নুরের দাবি, সেই আন্দোলনই গণঅভ্যুত্থানের মূল শক্তি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে জনগণ বিএনপি বা জামায়াত—কাউকেই ক্ষমতায় দেখতে চায় না। নুরের মতে, আগামীর সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তরুণরাই হবে প্রধান শক্তি, এবং দেশের নিরাপত্তা তাদের হাতেই বেশি সুরক্ষিত।
বক্তব্যে তিনি পিআর পদ্ধতির (Proportional Representation) গুরুত্বও তুলে ধরেন। নুর বলেন, উচ্চকক্ষে যদি আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়, তবে প্রায় সব রাজনৈতিক দলেরই প্রতিনিধিত্ব থাকবে, যা একটি কার্যকর সংসদ গঠনে সহায়ক হবে। তিনি দাবি করেন, নিম্নকক্ষে না হলেও উচ্চকক্ষে আগামী নির্বাচন থেকেই এই পদ্ধতি চালু করতে হবে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর উল্লেখ করেন, এখনো প্রায় ৪৮ শতাংশ ভোটার সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা কাকে ভোট দেবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, এমনকি বায়তুল মোকাররম মসজিদের খতিবও একযোগে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ইতিহাসে আছে। এসব থেকে শিক্ষা না নিলে ভবিষ্যতে নির্মম পরিণতি অপেক্ষা করছে। তাই রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি তার বার্তা—১০টি হোন্ডা, ২০ জন গুণ্ডা বা প্রশাসনের জোরে ভোটকেন্দ্র দখল করে কেউ এমপি, মন্ত্রী কিংবা সরকার গঠন করবে—এই যুগ শেষ হয়ে গেছে।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন কবির, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাজাহান আলী, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী রাজিব হোসেন এবং জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের মো. মাসুম।