নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নির্বাচনী মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ড. তাজ হাশমীর

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী (Nasiruddin Patwary)-এর সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও গবেষক ড. তাজ হাশমী (Dr. Taj Hashmi)। সম্প্রতি এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’র সম্মেলনে নাসীরুদ্দীন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। তাঁর দাবি—যদি সে সময় নির্বাচন হয়, তাহলে যারা শহীদ হয়ে কবরে শায়িত আছেন তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে, আর যারা হাত-পা হারিয়েছেন, তাদের অঙ্গ ফিরিয়ে দিতে হবে।

এই বক্তব্যকে ‘ধৃষ্টতা’ আখ্যা দিয়ে তাজ হাশমী নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলেন, “নাসীরুদ্দীন কোথা থেকে এমন আত্মবিশ্বাস পেলেন? তিনি কি বাংলাদেশের ভাগ্যবিধাতা? নির্বাচন হবে কি হবে না, তা কেবল সরকারের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হবে।” তিনি আরও জানান, তাঁরা মানসিকভাবে প্রস্তুত আছেন—ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তাজ হাশমীর মতে, পাটওয়ারীর এ ধরনের মন্তব্য শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে অযথা উত্তেজনাও ছড়ায়। তিনি সরাসরি বলেন, “এনসিপি এখন চাঁদাবাজ দলে পরিণত হয়েছে। তারা জানে, একটি আসনও জিততে পারবে না, তাই নির্বাচন বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে।”

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান শুধুই সংস্কারের জন্য হয়নি—বরং মূল দাবি ছিল শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ছাত্রদের আন্দোলন প্রথমে সংস্কারকেন্দ্রিক থাকলেও আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করার পর তা সরাসরি হাসিনাবিরোধী বিপ্লবে রূপ নেয়। “মানুষ প্রাণ দিয়েছে, হাত-পা হারিয়েছে—সবই হাসিনার স্বৈরতন্ত্রের অবসানের জন্য,” বলেন তিনি।

এ সময় তিনি জামায়াত সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, জামায়াত উপলব্ধি করেছে তারা সর্বোচ্চ ২০-২১টি আসন পেতে পারে। তাই দলটি প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতির নির্বাচন চায়; তা না হলে তারা নির্বাচনই না হওয়ার পক্ষে। এমনকি জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman) এ বিষয়ে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সবশেষে তাজ হাশমী বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ডিজিএফআই সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন গুঁড়িয়ে দেবেন? ডিজিএফআই জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। সমালোচনা করার মতো জায়গা আছে—যেমন, জনগণের ওপর নজরদারি না করে দেশের শত্রুদের দিকে নজর দেওয়া উচিত। কিন্তু ধ্বংসের হুমকি দেওয়া দায়িত্বশীল রাজনীতির ভাষা নয়।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *