নিজের ও বাবার অপকর্ম ঢাকতে সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের ভাইয়ের বিরুদ্ধে ফের অপপ্রচারে উপদেষ্টা আসিফ

মুরাদনগরে একের পর এক গুরুতর অভিযোগে নাম জড়াচ্ছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইয়া (Asif Mahmud Sojib Bhuiya) ও তার বাবার। ত্রিপল মার্ডার মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা, স্কুলশিক্ষিকা শিখা রাণীর ওপর নির্যাতন, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, এমনকি হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক মাছ চাষীর পুকুর দখলের মতো অভিযোগ উঠে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে। জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন (Banglavision) এসব বিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করার পর থেকেই আসিফের রাজনৈতিক অবস্থান টালমাটাল হয়ে পড়ে।

এমন পরিস্থিতিতে তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (Kazi Shah Mofazzal Hossain Kaikobad)-এর ভাই কাজী জুননুন বসরীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেন। কাজী জুননুন প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তবুও আসিফ নতুন ভিডিও প্রকাশ করে আবারও জুননুন বসরীর নামে অপপ্রচার চালান—যেখানে তিনি ফেইক আইডির বক্তব্যকে সত্য হিসেবে উপস্থাপন করেন। অথচ সেই আইডি নিয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে এবং গণমাধ্যমে একে ভুয়া হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, নিজের ও বাবার অপরাধ ঢাকতেই আসিফ নোংরা রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করছেন। তাদের ভাষ্য, অতীতে স্বৈরাচার আমলে যেমন বিএনপি–জামায়াতের ওপর সব দায় চাপানো হতো, আজ আসিফ নিজ অপকর্ম লুকাতে একই কৌশল নিচ্ছেন। তারা আহ্বান জানিয়েছেন, জনগণের আবেগ নয় বরং বাস্তবতা বুঝে দায়িত্বশীল রাজনীতি করার।

এদিকে বাংলাভিশনের প্রতিবেদনে যুক্ত সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল তার ফেসবুকে লিখেছেন, “আসিফ আমার আন্দোলনের সহযাত্রী, আমাদের বিপ্লবের ইমাম। কিন্তু বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে তার পরিবার অপরাধ করলে সেটি বলা যাবে না—এমন যুক্তি বিপ্লবের চেতনার পরিপন্থি।” তিনি জানান, নিহত পরিবারের সদস্যরা স্বেচ্ছায় অফিসে এসে অভিযোগ করেছিলেন। সেখানেই তারা আসিফের বাবার সঙ্গে আসামিদের ছবি ও প্রমাণ তুলে ধরেন।

শাকিলের দাবি, শুধু ত্রিপল মার্ডার নয়, বিল্লাল হোসেনের (আসিফের বাবা) বিরুদ্ধে শিখা রাণীকে নির্যাতনের ভিডিও, পুকুর দখলের ঘটনা, মোহাম্মদ আলীকে চাপ দিয়ে নেওয়া চেক ও মুচলেকার নথি—সবই অন ক্যামেরায় সাক্ষীদের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, “যদি এসব সবই সাজানো হয় তবে এতগুলো মানুষ কেন ক্যামেরার সামনে মুখ দেখিয়ে অভিযোগ করবেন?”

সাংবাদিক আরও বলেন, অন্য কোনো টেলিভিশন হয়তো সাহস করে প্রতিবেদনটি প্রচার করত না। ইশরাক হোসেন এমডি হওয়ায় বাংলাভিশন তা করেছে। “অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে দেখুন, আবেগে না ভেসে তদন্ত দাবি করুন,”—এই আহ্বান জানান শাকিল। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তিনি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেবেন।

স্থানীয়দের অভিমত, যদি একজন উপদেষ্টার পরিবার এত অভিযোগের মুখে থেকেও দায়মুক্ত থাকে, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে ন্যায়বিচার পাবে? আর বিপ্লবের নামে যারা অন্যায়ের ছায়া দেন, তাদের মুখোশ ফাঁস করাই এখন সময়ের দাবি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *