লক্ষ্মীপুরে এক সময়ের সক্রিয় ছাত্রদল নেতা সুলতান বাপ্পী (Sultan Bappy) দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। স্থানীয়ভাবে তাকে শেকলবন্দি অবস্থায় কষ্টের জীবন কাটাতে হলেও অবশেষে তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বাপ্পী খালেদা জিয়ার অসুস্থতার সময় দোয়া মাহফিল আয়োজন করেছিলেন। এরপর থেকেই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা বারবার তার ওপর হামলা চালায়। সেই ধারাবাহিক পিটুনির পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মানসিক ভারসাম্য হারান। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয় যে, দীর্ঘ সময় তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়েছিল। শয্যাশায়ী অবস্থায় তার কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত ক্ষত তৈরি হয়।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে বাপ্পীর অসুস্থতার খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। তিনি সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দেন বাপ্পীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসার। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বাপ্পীর বাড়ি রমারখিলে যান। এ সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ভিডিও কলে তার সঙ্গে কথা বলেন।
নাছির উদ্দিন বলেন, “গণমাধ্যমের সৌজন্যে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন এবং পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছেন। এটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।”
সুলতান বাপ্পীর ভাই ছোলায়মান জানান, ২০২১ সালে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত মাহফিলের পর থেকেই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় তাকে পিটিয়েছে। মাথায় আঘাত পেয়ে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারান। পরবর্তীতে তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সুস্থতা ফেরেনি। ফলে বাধ্য হয়ে পরিবার তাকে শেকলবন্দি করে রাখে।
অসুস্থ বাপ্পী গণমাধ্যমের সামনে দোয়া কামনা করেন এবং পরিবারের জন্য উপার্জনের সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
ছাত্রদল নেতাদের দাবি, লক্ষ্মীপুরসহ সারাদেশে গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের দমননীতির কারণে অসংখ্য নেতা-কর্মী শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। বাপ্পীর ঘটনাও তারই অংশ। তাদের আশা, উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি আবারও রাজপথে আন্দোলনে ফিরবেন।